চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে আধাবেলা কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন

বেতন ভাতা ও পেনশন সরকারি কোষাগার থেকে প্রদানের দাবি পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি কোষাগার থেকে বেতন ভাতা ও পেনশন প্রদানের দাবিতে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। গতকাল সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা কার্যালয় চত্বরে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন চুয়াডাঙ্গা পৌর শাখার সভাপতি আয়ুব আলী, সহসভাপতি আশাবুল হক বিশ্বাস, আবু বক্কর বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রধান উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন। বক্তব্য রাখেন সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান কাউসার।
বক্তারা বলেন, বরাবরের মতো দেশের ৩শ’ ২৬টি পৌরসভার মধ্যে প্রায় অধিকাংশ পৌরসভায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন-ভাতাদি নিয়মিত পাচ্ছেন না। এ জন্য পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অবিলম্বে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা প্রদানের দাবি বাস্তবায়ন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা ও পেনশনের দাবিতে সারাদেশের ন্যায় অর্ধদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে আলমডাঙ্গা পৌরসভা চত্বরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে ও পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান সহকারী খাইরুল ইসলাম নাসিম, লাইন্সেস পরিদর্শক আনিসুর রহমান, স্টোরকিপার হামিদুল ইসলামসহ পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী। নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, সরকারি কোষাগার থেকে তাদের বেতন-ভাতা ও পেনশন প্রদান করতে হবে। তাদের দাবি অবিলম্বে মেনে নিতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তারা।
জীবননগর ব্যুরো জনিয়েছে, বাংলাদেশ পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও পেনশন সরকারি কোষাগার থেকে প্রদানের একদফা দাবিতে জীবননগর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গতকাল সোমবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। সকালে কর্মসূচি চলাকালে পৌর মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে তাদের ন্যায্য দাবির প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে এ দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ব আহ্বান জানান।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে বাংলাদেশ পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদফার ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন পৌর সচিব জায়েদ হোসেন, পৌর কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক সাজেদা আক্তার, ভারপ্রাপ্ত সেনেটারী ইন্সপেক্টর জামাল উদ্দিন, কর আদায়কারী ওসমান গণি, সরাফত হোসেন ও আবু জাফর প্রমুখ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, বেতন-ভাতা ও পেনশন সুবিধা সরকারি কোষাগার থেকে পাওয়ার দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন মেহেরপুর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে ওই দাবিতে পৌরসভা প্রাঙ্গণে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। নেতৃত্ব দেন পৌর সভার সচিব তোফিকুল আলম। এ সময় সেখানে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান নেন।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা ও পেনশনসহ অন্যান্য সুবিধা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রদানের দাবিতে অর্ধ দিবস কর্মবিরতী পালন করেছেন মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। বাংলাদেশ পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন ঘোষিত কর্মসূচির আলোকে গতকাল সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পৌর কার্যালয় প্রাঙ্গণে একত্রিত হয়ে ওই কর্মসূচি পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান পৌরসভা। কিন্তু এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাত পান না। পৌরসভার রাজস্ব আয়ের ওপর নির্ভর করে বেতন-ভাতা হয়। তাই দেশের বেশিরভাগ পৌরসভা বেতন-ভাতা সময়মত পরিশোধ করতে পারে না। অথচ দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা পৌর নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
পৌরসভা অচল হলে দেশ অচল হয় উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। ছেলে-মেয়েদের লেখাপাড়ার খরচ সময়মত যোগাতে পারছি না। বিভিন্ন দোকানে বাকির পরিমাণ বাড়তে থাকায় অপমানজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। চাকরি করি তাই অন্য কোনো পেশায়ও যুক্ত হতে পারছি না। অপরদিকে সারাজীবন চাকরি করে পেনশন ছাড়াই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সু-দুষ্টি কামনা করে বক্তারা আরও বলেন, অনেকের দাবি সরকার পূরণ করেছেন। তাহলে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কী দোষ করেছেন? অনতিবিলম্বে আন্দোলনরতদের দাবি পূরণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক গাংনী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশরী শামীম রেজা, উপসহকারী প্রকৌশলী জামিউল ইসলাম, গাংনী পৌর শাখা সভাপতি আজিজুল হক ও সাধারণ সম্পাদক ইনামুল হক, সহসভাপতি মামুন-অর-রশিদ, আসলাম আলী, যুগ্ম সম্পাদক মিলন হোসেন, কোষাধ্যক্ষ জাকিরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেনসহ গাংনী পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
এদিকে কর্মবিরতি কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম ও প্যানেল মেয়র নবীর উদ্দীনসহ কাউন্সিলরবৃন্দ।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছন, সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা ও পেনশন সুবিধার দাবিতে অর্ধ-দিবস কর্মবিরতি পালন করেছে ঝিনাইদহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত পৌরসভার প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মবিরতি পালন করেন তারা।
কর্মবিরতি চলকালে বক্তব্য রাখেন পৌর সভার সচিব আজমল হোসেন, নির্বাহী প্রকৗশলী সিরাজুল হক, পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মধু, পৌর কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হান্নান, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, সহসভাপতি ইদ্রিস আলী, শাহীন হোসেন, সেলিম রেজা প্রমুখ।
বক্তারা অবিলম্বে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় তারা আরও কঠোর কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।