চুয়াডাঙ্গা পৌরসভাধীন দিগড়ী গ্রামে দুর্বৃত্তের হানা ॥ ধারালো অস্ত্রের কোপ থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেলো গৃহবধূ ও তার শিশু সন্তান

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পৌরসভাধীন দিগড়ী জোয়ার্দ্দার পাড়ার সিরাজুল ইসলাম পচার ঘরের জানালা দিয়ে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। গত মঙ্গলবার দিনগত ভোর রাত্রে ঘটনাটি ঘটে বলে জানান সিরাজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার। এ সময় সিরাজুল ইসলামের মেজ ছেলের স্ত্রী শাহানাজ পারভীন ও তার ৪ বছরের ছেলে আবির হাসান খাটে ঘুমিয়ে ছিলো। ফজরের নামাজের আযানের পূর্বে আনুমানিক ভোর ৪টার দিকে জানালার ভেতরে হাত ঢুকিয়ে ধারালো অস্ত্র রাম দা দিয়ে দুর্বৃত্তরা কোপাতে থাকে। জানালা থেকে ছেলে ও গৃহবধূ একটু দুরে থাকায় কোপটি খাটের কাঁথা ও টোশকে আঘাত হানে। টোশক ও কাঁথা কেটে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে যায় গৃহবধূর। তখনও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে দুর্বৃত্তরা। এ সময় গৃহবধূ শাহানাজ চিৎকার দিয়ে ছেলেকে নিয়ে গড়িয়ে খাটের নিচে পড়ে যায়। গৃহবধূর চিৎকারে বাড়ির সকলে ছুটে আসে। তখন দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। গৃহবধূ ও ছেলের আর্তচিৎকারে বাড়িতে এক ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সকাল হলে গ্রামের লোকজন, পৌর কাউন্সিলর আবুল হোসেন, মহিলা কাউন্সিলর শেফালী খাতুনসহ অনেকেই ছুটে যান ঘটনাস্থলে। পুলিশকেও জানানো হয় বিষয়টি। ওই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে গৃহবধূ ভয়ে আঁতকে ওঠে এবং বলতে থাকেন আমাকে, আমার সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করার উদ্দেশেই তারা এসেছিলো। জানালা থেকে একটু দুরে না থাকলে আমরা সবাই চাকা চাকা হয়ে যেতাম।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে গৃহবধূর শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম ও তার মেজ ছেলে সেলিম জোয়ার্দ্দার বলেন, গত জুন মাসের ১৪ ও ১৭ তারিখে আমাদের বাড়ির গেটের মধ্যে প্রাণ নাশের হুমকি ও চাঁদা চেয়ে দু-দফায় অশ্লীল ভাষায় কে বা কারা চিঠি ফেলে রেখে যায়। বিষয়টি ১৭ জুন চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় বিষয়টি জানানো হয়। থানা থেকে বলা হয় গ্রামের বোখাটে ছেলেরা ঘটিয়েছে। ওটা তেমন কিছু নয়। এর পর কিছু হলে আমাদের মোবাইল নম্বরে জানাবেন। ২৪ দিনের মাথায় আবারো হত্যার উদ্দেশে আমার বাড়িতে হামলা চালানো হলো। বিষয়টি কোনোভাবেই ছোট-খাট ঘটনা নয়।
সিরাজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার আরও জানান, গত জুন মাসের প্রথম দিকে এ গ্রামেরই মৃত্যু লৎফর রহমানের ছেলে আজিজুল হক চুয়াডাঙ্গা ভূমি অফিসে আমাদের নামে সরকারি জমি দখলের মিথ্যা অভিযোগ করে। অভিযোগ পেয়ে সার্ভেয়ার সরেজমিনে এসে জমি মেপে দেখেন আমরা আমাদের জমিতেই আছি। বরং আরও জমি আমরা ছেড়ে আছি। মিথ্যা অভিযোগ করায় চলতি মাসের ৭ জুলাই গ্রাম্য সালিস ডাকা হয়। সালিসে গ্রামের ম-ল মাতব্বর গণের নিকট আজিজুল ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাই এবং এমন কাজ আর করবো না বলে মৌখিক ওয়াদা করে। এর ৪ দিনের মাথায় হত্যার উদ্দেশে আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ হামলার পেছনে আজিজুল হক ও তার সহযোগিরা জড়িত বলে আমার বিশ্বাস। আমি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিকট ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সিরাজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো বলে জানা গেছে।