চুয়াডাঙ্গায় হিমাগারে আলু রেখে ব্যাপক লোকসান গুনতে হচ্ছে

বছর আলু আবাদে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

 

মো. শাহাবুদ্দিন: চুয়াডাঙ্গা জেলার আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আলু হিমাগারে রেখে তাদের এখন ব্যাপক লোকসান গুনতে হচ্ছে। আলু নিয়ে এখন তারা বিপাকে। আর দু মাস পর হিমাগার থেকে ভাড়া পরিশোধ করে আলু বাড়ি আনতে হবে। বর্তমান বাজারে আলুর চাহিদা কম থাকার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় গত বছর ১ হাজার ৫৫০ হে. জমিতে উন্নত জাতের আলুর আবাদ হয়েছিলো। উৎপাদন হয়েছিলো ৩৮ হাজার ৭৫০ মে.টন। এর মধ্যে দামুড়হুদা উপজেলায় ৩শ হে. আলমডাঙ্গায় ৩শ হে., জীবননগরে ৬৩০ হে. এবং সদর উপজেলায় ৬১০ হে. জমিতে আলুর আবাদ হয়। উৎপাদিত আলুর সিংহভাগ আলু কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় বিভিন্ন হিমাগারে রেখে আসেন। এক বস্তা (৮৪ কেজি) আলুর মূল্য, বস্তার মূল্য, হিমাগার ভাড়া, পরিবহণভাড়া সব মিলিয়ে খরচ দাঁড়ায় ১ হাজার ২৯০ টাকা। হিমাগারে এখন প্রতি বস্তা আলু ৪শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি বস্তায় লোকসান হচ্ছে ৮৯০ টাকা করে। অনেক চাষি আলু তোলার পর বিক্রি না করে অধিক লাভের আশায় হিমাগারে রেখে আসেন। তারা এখন হিমাগার থেকে আলু আনতে পারছেন না। আর আলু হিমাগার থেকে আনলে বস্তা প্রতি ১০/১৫ কেজি কমে যাবে এতে লোকসান আরো বেড়ে যাবে। কয়েকমাস পর আলু লাগানো শুরু হবে। হিমাগার থেকে আলু আনতে হলে এখন অনেক চাষিকে টাকা ঋণ নিতে হবে। অনেকেই কষ্টে অর্জিত আলু পানির দরে সেখানেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

দামুড়হুদা উপজেলার পুরাতন আলুব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন জানান, তিনি গত বছর বিভিন্ন চাষিদের কাছ থেকে ৪০০ টাকা মণ দরে আলু কিনেছিলেন। তার এ আলু  যশোর হিমাগারে রাখা পর্যন্ত সমস্ত খরচ হয়েছে (৮৪) কেজির বস্তা ১ হাজার ২৯০ টাকা। তার এখন ওই আলু হিমাগার থেকে বিক্রি করলে বস্তা প্রতি ৮৯০-৯০০ টাকা লোকসান হবে। হিমাগার থেকে বাড়ি আনলে বস্তা প্রতি ১০/১৫ কেজি কমে যাবে এতে লোকসান আরো অনেক বেড়ে যাবে। তিনি এখন আলুর দাম বাড়বে এমন আশায় হিমাগারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বদনপুর গ্রামের আলুচাষি মতিয়ার রহমান জানান, তার নিজের জমিতে উৎপাদিত আলু ২০০ মণ ও চাষিদের কাছ থেকে আরো ৪০০মণ কিনে মোট ৬০০ মণ আলু হিমাগারে রেখে আসেন। এবার মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হবে। চাষিদের এভাবে প্রতিবছর আলুচাষে লোকসান গুনতে হলে চলতি মরসুমে এলাকার চাষিরা আলুচাষে আগ্রহ হারবেন।