চুয়াডাঙ্গায় সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য চালু হলো ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল ভ্যান ‘জীবনযাত্রা’

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সুবিধা বঞ্চিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য চালু করা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল ভ্যান ‘জীবনযাত্রা’। গতকাল সোমবার বিকেলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের এই মেডিকেল ভ্যানের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। ফিতা কেটে উদ্বোধনের পর জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস মেডিকেল ভ্যানের ভেতরে ডা. মোহাম্মদ শাহিনের কাছে প্রথমে চোখ দেখান।

উদ্বোধন উপলক্ষে শহরের কেদারগঞ্জ এলাকায় ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার সম্মেলনকক্ষে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আমিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. পীতাম্বর রায়। ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এনাম আহমেদ চৌধুরী, মনসুর আহমেদ চৌধুরী, ড. রেজাউল হক ও ডা. হাসিব মাহমুদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইম্প্যাক্ট চুয়াডাঙ্গা প্রোগ্রামের প্রশাসক ডা. শাফিউল কবীর।

প্রধান অতিথি বলেন, ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন কম খরচে এলাকার মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন সেবামূলক কার্যক্রমে আরো এগিয়ে যাবে এ আশা করছি। ইম্প্যাক্টের কর্মকর্তারা এ সময় জানান, মেডিকেল ভ্যান দরিদ্র জনগোষ্ঠির চোখ, গর্ভবতী মহিলা, ফিজিওথেরাপি ও ইসিজিসহ চিকিৎসা নির্ণয় ও নির্ধারণ কাজ করবে। জীবনযাত্রা মেডিকেল ভ্যানটি সপ্তাহে দু দিন করে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় সেবা কার্যক্রম চালাবে। ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এ সংস্থার অধীন ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ ও সম্ভাব্য প্রতিবন্ধিতা দূরীকরণার্থে নানারকম স্বাস্থ্যসেবামূলক ও সচেতনতামুখী কার্যক্রম সফলভাবে এগিয়ে চলেছে। এই সংস্থা চুয়াডাঙ্গা জেলায় মাঠ পর্যায়ে যেসব স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মাতৃক্লাবের মাধ্যমে স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রদান, পুষ্টিমান রান্নার ওপর প্রশিক্ষণ দান, ভিটামিনের অভাব পূরণার্থে বসতভিটায় শাকসবজির বাগান তৈরি, নিরাপদ সন্তান প্রসবের লক্ষ্যে ধাত্রী প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশ সরকারের প্রচলিত টিকাদান কর্মসূচিতে সহায়তা প্রদান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রাথমিক চক্ষু পরিচর্যা ও দৃষ্টি পরীক্ষার ওপর প্রশিক্ষণ দান, সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিবন্ধিতার ওপর প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় কমিউনিটি লিডারদের পুষ্টি ও প্রতিবন্ধিতার ওপর প্রশিক্ষণ ।

বক্তারা আরো জানান,  চুয়াডাঙ্গা শহরে অবস্থিত ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের মাধ্যমে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটারে বিশেষজ্ঞ সার্জন দ্বারা চোখ, অর্থোপেডিক, ইএনটি, জেনারেল সার্জারি, প্লাস্টিক সার্জারি ও সিজারিয়ান করা হয়। এছাড়া স্যাটেলাইট ক্লিনিকের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত গরিব মানুষের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করে চলেছে। সেই সাথে রয়েছে স্যার জন উইলসন এসিসিটভ ডিভাইস সেন্টার। যেখানে দক্ষ টেকনিশিয়ান দ্বারা শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সহায়ক সামগ্রী প্রস্তুত ও সরবরাহ করা হয়। ফিজিওথেরাপি ইউনিট ব্যথা নিরাময়ে সুনামের সাথে কাজ করছে।