চুয়াডাঙ্গায় কর্মশালায় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল আমিন

নারী শিক্ষা অব্যাহত রাখতে ও নারীদেরকে আত্মপ্রত্যয়ী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় নারী শিক্ষা অব্যাহত ও নারীকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তোলার বিষয়ে করণীয় শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের উদ্যোগে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলা শিক্ষা কার্যালয় গতকাল শনিবার স্থানীয় সার্কিট হাউসে এর আয়োজন করে। দিনব্যাপী এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মো. নুরুল আমিন। তিনি বলেন, নারী শিক্ষা অব্যাহত রাখতে ও নারীদেরকে আত্মপ্রত্যয়ী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। অর্থের অভাবে শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত স্কুল কলেজ ও মাদরাসায় অধ্যায়নরত দরিদ্র মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ এই শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট। প্রধান অতিথি উল্লেখ করেন, এই ট্রাস্টের উল্লেখযোগ্য কার্যাবলি হচ্ছে, ষষ্ঠ থেকে ¯œাতক/সমমান পর্যন্ত দরিদ্র মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা বেতনে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি ও উপবৃত্তি প্রদান; ট্রাস্টের ফান্ডের জন্য অর্থ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিনিয়োগ; শিক্ষা কার্যক্রমে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও সমাজের বিত্তশালীদের সম্পৃক্ত করা ও শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধসহ সকল পর্যায়ে শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক আনজুমান আরা। স্বাগত বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউর রহমান।
আনজুমান আরা বলেন, নারীদেরকে মূলধারায় নিয়ে আসার প্রচেষ্টা চলছে। আমরা এখনও কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। মেয়ে-ছেলে বিভেদ ভুলে গিয়ে তাদেরকে সন্তান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সুযোগ পেলে ছেলে-মেয়ে সকলেই সমান ভূমিকা রাখতে পারে। এ জেলায় নারী শিক্ষার অন্যতম অন্তরায় বাল্যবিয়ে। ইউএনও বা ম্যাজিস্ট্রেটের ভয়ে অনেকে নিজ কোমলমতি সন্তানকে এলাকার বাইরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দিচ্ছেন। এই লুকোচুরির মধ্যদিয়ে নিজেদেরকেই ক্ষতি করছেন। সরকার নারী শিক্ষার উন্নয়নে যে সুযোগ সৃষ্টি করেছে তা গ্রহণ করতে হবে। কর্মশালায় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ট্রাস্ট পরিচিতি উপস্থাপন করেন এর সহকারী পরিচালক ব্রেনজন চাম্বুগং। এছাড়া জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল, আলমডাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েভ ফাউ-েশনের প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী জহির রায়হান তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
দামুড়হুদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মতিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন, হাসাদহ মডেল ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. আকতারুজ্জামান। বক্তব্য রাখেন- চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান, সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক নওরোজ মোহাম্মদ সাঈদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৃনাল কান্তি দে, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজাদ জাহান, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ই্উএনও) রফিকুল হাসান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর বেগম, সাংবাদিক শাহ আলম সনি ও মরিয়ম শেলী, ব্র্যাকের জেলা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম বক্তব্য রাখেন। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদেরকে ছয়টি দলে ভাগ করে বিষয়ভিত্তিক প্রতিবেদন তৈরি ও উপস্থাপন করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা এ সময় নারী শিক্ষায় প্রতিবন্ধকতা, নারী শিক্ষা অব্যাহত রাখতে স্থানীয়ভাবে করণীয়, নারীশিক্ষা অব্যাহত রাখতে সরকারের আরও কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার, নারীকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তুলতে বাধাসমূহ, নারীকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তুলতে স্থানীয় পর্যায়ে করণীয় এবং এ বিষয়ে সরকারের আরও কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন সে বিষয়ে লিখিত মতামত উপস্থাপন করেন।