চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর ও তিতুদহে ১০ টাকা কেজি দরে চাল প্রাপ্তিদের তালিকা তৈরি নিয়ে চলছে প্রতিযোগিতা

 

প্রকৃত সুবিধাভোগদের তালিকা হওয়া নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন?

স্টাফ রিপোর্টার: স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতাসীন দলে নেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল প্রাপ্তিদের তালিকা প্রস্তুত করা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। ফলে দফায় দফায় তালিকা করা হচ্ছে কাটাকাটি আর ছাটাছটি। নাম তালিকাভুক্ত করতে হতদরিদ্র মানুষগুলো ছুটছে দলীয় নেতাকর্মীদের পিছু। এমনও শোনা গেছে ইউনিয়নের বরাদ্দকৃত কার্ডের চাইতে কোনো কোনো ওয়ার্ডে দ্বিগুণ তালিকা করেছেন নেতাকর্মীরা। তবে প্রকৃত দরিদ্র পরিবারগুলো যেন তালিকাভুক্ত হয় তেমনটাই দাবি সচেতন মহলের।

জানা গেছে, বছরে ৫ মাস হতদরিদ্র পরিবারের খাদ্যশস্য জোগাড় করতে কষ্ট হয়। তাই দেশের ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিতে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করে। সে লক্ষ্যে গত ৭ সেপ্টেম্বর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু করে সরকার। চুয়াডাঙ্গাতে এ কর্মসূচির আওতায় চাল বিক্রি এখনও শুরু না হলেও দ্রুত এ কর্মসূচি শুরু করতে ইউনিয়নগুলোতে তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। সদর উপজেলার বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন দলে নেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় রীতিমতো তালিকা প্রস্তুত করতে প্রতিযোগিতা চলছে। তাই নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মতের হওয়ায় দফায় দফায় তালিকা করছে কাটাকাটি আর ছাটাছাটি। এদিকে ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটির সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে নিযুক্ত ট্যাগ অফিসার সভাপতি, ইউপি সদস্য সদস্য সচিব দুজন গণ্যমান্য এবং ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট ইউনিয়ন কমিটির কথা বলা হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নে সুবিধাভোগী কার্ডের সংখ্যা বরাদ্দ করা হয়েছে ১ হাজার ২২৪টি। আর এ চাল বিতরণের ডিলারশিপ পেয়েছেন ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের আ.লীগ নেতা সাজ্জাদুর রহমান ঝন্টু ও হায়দার মল্লিক। অপরদিকে বেগমপুর ইউনিয়নে সুবিধাভোগী কার্ডের সংখ্যা ১ হাজার ২৪৫টি। আর ডিলারশিপ পেয়েছেন হরিশপুর গ্রামের আ.লীগ নেতা সেলিমের নাম শোনা গেলেও অপর জনের নাম জানা যায়নি। বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়ন বিভক্ত হয়ে গাড়াইটুপি ও নেহালপুর নামে দুটি ইউনিয়ন হওয়ায় প্রাপ্ত কার্ড সমানভাবে ভাগ হয়ে গেছে। সুবিধাভোগী প্রত্যেক কার্ডধারী ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন। এ খাদ্যশস্য সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর এবং মার্চ ও এপ্রিল মাসে দেয়া হবে। বেগমপুর ইউনিয়নের এক যুবলীগ নেতা বলেন, তালিকা প্রস্তুত নিয়ে যা শুরু হয়েছে তা বলার মতো না। ইউনিয়নে কার্ডের সংখ্যা ১২শ হলেও কোনো কোনো ওয়ার্ডে ৫শ থেকে ৭শ লোকেরও তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ফাইনাল তালিকা প্রকাশ পেলে নেতাকর্মীরা একে অপরকে দোষারোপ করতে ছাড়বে না বলেও সাধারণ নেতাকর্মীরা মনে করছে। এ বিষয়ে তিতুদহ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন মাস্টার বলেন, তালিকা প্রস্তুত নিয়ে এ ইউনিয়নে কোনো সমস্যা হচ্ছে বলে আমার জানা নেই। অপরদিকে বেগমপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল্লাহ বলেন, তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে তিতুদহ ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন এবং বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন বলেন, আমাদের নিকট নির্দেনামূলক কোনো চিঠিপত্র আসেনি। আর তালিকা প্রস্তুত করার ব্যাপারে আমাদের সাথে কোনো পরামর্শও করা হয়নি। অতএব এ বিষয়ে আমরা কিছুই বলতে পারবো না। বতে সরকার যে মহত উদ্যোগ নিয়ে দরিদ্র মানুষের কথা ভবে স্বল্পমূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে তা যেন কারো কারণে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে দিকটি নীতিনির্ধারণীরা তদারকি করবেন এমনটাই প্রত্যাশা সুধীমহলের।