চুয়াডাঙ্গার বসু ভাণ্ডারদহে বর আসার কিছুক্ষণ আগে পুলিশ নিয়ে হাজির ইউএনও : ভেস্তে গেলো বাল্যবিয়ে

 

স্টাফ রিপোর্টার: বিয়ের সবই ঠিক ঠাক। বরসহ বরযাত্রী আসছে মাইক্রোযোগে। ঘড়ির কাঁটা তখন দুটো পেরিয়ে তিনটের দিকে। হর্ন বাজছে। বিয়ে বাড়ির লোকজনের উঁকিঝুঁকি রাস্তার দিকে। না, বর নয়, সরকারি গাড়ি থেকে নামলেন উপজেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা। সাথে পুলিশ। জনপ্রতিনিধও। বিয়ে বাড়ির লোকজনের চোখ তখন চড়কগাছ। দৃশ্যটি গতকাল বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বসুভাণ্ডারদহে ফুটে ওঠে।

বিয়েবাড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সাথে পুলিশসহ জনপ্রতিনিধি। এ খবর পেয়েই রাস্তা থেকেই ফিরেছে বর চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের শ্রীকোলের মোমিনসহ বরযাত্রীরা। বিয়ে হলো না কেন? কনের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি। খবর পেয়ে কনের পিতা সুন্নত আলীর বাড়িতে প্রাশসিনক কর্মকর্তা হাজির হয়ে বিয়ের বাল্যবিয়ের আয়োজন বন্ধের নির্দেশ দেন। কনের পিতা আপত্তি তুলে বলেন, রান্নাবান্না হয়ে গেছে। বরসহ বরযাত্রী পথের মধ্যে। এ বিয়ে বন্ধ করবো কীভাবে? আইন মানে না অজুহাত। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কনের পিতাকে আটকের নির্দেশও দেন। অবশ্য শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করতে হয়নি। তিনি অঙ্গীকার করে বলেছেন, মেয়ে মুনিয়ার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ের আসনে বসাবো না। গ্রামের মাতবরদেরও কয়েকজন বিষয়টির দিকে নজর রাখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেয়ায় শেষ পর্যন্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ পুলিশ ফেরে সেখান থেকে।

মুনিয়া ডিঙ্গেদহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী স্মরণী বিদ্যাপীঠের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। অপ্রাপ্ত বয়সেই তাকে বিয়ের আসনে বসাতে জন্ম নিবন্ধন সনদ নেয়ার চেষ্টাও চালানো হয়। তা নিতে ব্যর্থ হলেও কাজি স্বাধীন বিয়ে পড়াতে রাজি হন। এ কারণেই বিয়ের আয়োজন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় বলে স্থানীয়দের বেশ কয়েকজন জানিয়েছে।