চুয়াডাঙ্গার নুরুল্লাপুর-ঝাজরি কাঁচা রাস্তার ওপর ব্রিজ নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী : রাতের আঁধারে চলে ঢালাই কাজ

 

স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি অর্থে নির্মাণ হওয়া বিভিন্ন কাজে রডের বদলে যখন বাঁশ বা বাঁশের কাবারি ব্যবহার নিয়ে দেশে ও বিদেশে তোলপাড় অব্যাহত রয়েছে। ঠিক তখনি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নুরুল্লাপুর-ঝাজরি গ্রামের মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তার ওপর নির্মাণাধীন ব্রিজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের বালি ও সিমেন্ট। তাই রাতের আঁধারেই সারা হচ্ছে ঢালাইয়ের কাজ। অপর দিকে মাঠের মধ্যে ব্রিজ নির্মাণের কাজ হওয়ায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠন সাইনবোর্ড ব্যবহার করার প্রয়োজনও মনে করেননি। ফলে ব্রিজটি নির্মাণে যেমন ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে তেমনি ব্রিজটির স্থায়িত্ব কতোদিন হবে তা নিয়েও জনমনে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।

এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নের ঝাজরি ও নুরুল্লাপুর গ্রামের মানুষের মধ্যে স্বল্প সময়ে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা হচ্ছে ঝাজরি গ্রামের মাঠের রাস্তা। আর রাস্তার মাঝে রয়েছে নুরুল্লাপুর বিল। শুষ্ক মরসুমে যাতায়াতে খুব একটা সমস্যা না হলেও বর্ষ মরসুমে ১০-১২ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে এ দুটি গ্রামের মানুষের যাতায়াত করতে হয়। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি বিলের ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের। চলতি বছরের প্রথম দিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে বিলের ওপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। আর টেন্ডারে অংশ নিয়ে এ কাজের দায়িত্ব পান চুয়াডাঙ্গার মাদানি এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাজে কুষ্টিয়ার বালি এবং দেশীয় মানসম্মত সিমেন্ট ব্যবহার করার ও মিশ্রণের অনুপাত হবে ১ বস্তা সিমেন্ট ২ বস্তা বালি ও ৪ বস্তা খোয়া। সেখানে নিম্নমানের সিমেন্ট ও লোকাল বালি ব্যবহারের পাশাপাশি অনুপাতেও রয়েছে কম বেশ। দিনের বেলায় কাজ করলে মানুষের চোখে পড়বে এই ভেবে রাতের আঁধারে করা হচ্ছে ঢালাইয়ের কাজ। আর ঢালাইয়ে ঘাপলা করে ওপরের প্লাস্টার করা হচ্ছে ঠিকঠাক মতো। যাতে করে বোঝার উপায় না থাকে। সিডিউল মোতাবেক কাজ করার জন্য স্থানীয়রা বললেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠন তাদের কথায় কর্ণপাত পর্যন্ত করছে না। কাজ করার আগে সাইনবোর্ড টাঙানোর কথা থাকলেও তা করা হয়নি। ফলে নির্মাণাধীন ব্রিজটির স্থায়িত্ব নিয়েও জনমনে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত পিআইও) মিজানুর রহমান বলেন, একা মানুষ দুটি উপজেলার (আলমডাঙ্গা ও চুয়াডাঙ্গা সদর) কাজা একার পক্ষে দেখা সম্ভব না। তারপরও আমার জানামতে কাজ ঠিকঠাক মতই হচ্ছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অংশীদার ইসলাম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয়ভাবে দুটি পক্ষ হয়ে যাওয়ায় এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে কেউ কেউ। অনেক সময় মসলা বেশি মেশানো হয়ে গেলে মাঝে মধ্যে একটু সন্ধ্যা হয়ে যায়। তাছাড়া কাজ সিডিউল মোতাবেকই করা হচ্ছে। আর বোঝেন তো অফিস রয়েছে।