চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা সাহিত্যের পণ্ডিত ভাষা সৈনিক মুন্সি আব্দুস ছাত্তার

জীবননগর ব্যুরো: পিতা মরহুম মুন্সি আব্দুল বারীর পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা সাহিত্যের পণ্ডিত ভাষা সৈনিক মুন্সি আব্দুস ছাত্তার। গতকাল সোমবার দুপুরে স্টেডিয়ামে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার পিতার কবরের পাশে দাফন করা হয়। এ সময় তার সন্তানরাসহ সহকর্মী ও উপস্থিত বিপুল সংখ্যক ছাত্র এবং সর্বস্তরের মানুষ শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন। অশ্রুসিক্ত নয়নে চির বিদায় জানান এ শিক্ষা গুরুকে।

জীবননগর উপজেলার একমাত্র ভাষা সৈনিক, বাংলা সাহিত্যের পণ্ডিত, প্রবীণ শিক্ষক মুন্সি আব্দুস ছাত্তার গত রোববার রাতে বার্ধক্যজনিত রোগে ইন্তেকাল করেন। ভাষা সৈনিক মুন্সি আব্দুস ছাত্তার পাবনার অ্যাডওয়ার্ড কলেজে লেখাপড়াকালে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এ অপরাধে পাক সরকারের নির্দেশে তাকে কলেজ থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেয়া হয়। বাড়ি ফিরে তিনি দৌলৎগঞ্জে এমই স্কুল প্রতিষ্ঠা করে শুরু করেন শিক্ষকতা। পরে তিনি দৌলৎগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এখানে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে তিনি হাসাদাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। পরে এমই স্কুল ভেঙে জীবননগর থানা বহুমুখী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। ১৯৯৫ সালে এ স্কুল থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পরে তিনি সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ শিক্ষাগুরু তার জ্ঞানের ভাণ্ডার বিলিয়ে গেছেন। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে জীবননগর স্টেডিয়ামে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে মরহুমের বর্ণময় কর্মজীবন নিয়ে আলোকপাত করেন তার ছাত্র উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, ছাত্র ও সহকর্মী শিক্ষক শওকত আলী মন্টু, আব্দুল কাদের, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি রুহুল আমিন। রাজনীতিক কাজী বদরুদ্দোজার পরিচালনায় জানাজা অনুষ্ঠানে কথা বলেন মরহুমের ছেলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা মুন্সি আব্দুস সবুর। শেষে জানাজার নামাজে ইমামতি করেন তার সহকর্মী জীবননগর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ধর্মীয় শিক্ষক মাও. গোলাম রব্বানী।