চিরনিদ্রায় শায়িত অবিসংবাদিত নেতা ম্যান্ডেলা

মাথাভাঙ্গা মনিটর: দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা ও দেশটির প্রথম কৃষাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলাকে নিজ গ্রাম কুনুতে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। বাংলাদেশ সময় গতকাল রোববার বিকেলে তাকে সমাহিত করা হয়। সামরিক বাহিনী ও ম্যান্ডেলার স্বজনরা তার শবদেহ বিশেষ ব্যবস্থায় বহন করে সমাধিস্থলে নিয়ে যান। পরিবারের সদস্যরা ঐতিহ্যবাহী খোসা প্রথায় সমাহিত করতে অল্প কয়েকজনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সপ্তাহব্যাপি নানা আনুষ্ঠানিকতায় ম্যান্ডেলাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর রাজধানী প্রিটোরিয়া থেকে শনিবার তার কফিন ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের ছোট্ট গ্রাম কুনুতে আনা হয়। সেখানেই রোববার শুরু হয় তার শেষকৃত্য। ঐতিহ্যগত আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ম্যান্ডেলাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। তার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন আত্মীয়স্বজন, জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও বিদেশি অতিথিরাসহ প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ। ম্যান্ডেলার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটুও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ১৯১৮ সালে কুনুতে খোসা সম্প্রদায়ে জন্ম নেন ম্যান্ডেলা। সেই গোত্রের প্রথাগত অনুযায়ী তাকে শেষ বিদায় জানানো হয়। মৃত্যুর পর সপ্তা ধরে তাকে শ্রদ্ধা জানায় দেশ-বিদেশের লাখো মানুষ। সিএনএনকে এক সাক্ষাৎকারে ম্যান্ডেলার মেয়ে মাকি ম্যান্ডেলা বলেন, দেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের এ গ্রামের বাড়িতেই সবচেয়ে বেশি শান্তি পাওয়ার কথা সব সময় বলতেন ম্যান্ডেলা। দেখুন, এ পাহাড়গুলোকে তিনি ভালোবাসতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, এটাই তার জায়গা।

সর্বশেষ শনিবার কুনুর উদ্দেশে যাত্রা করার আগে প্রিটোরিয়ার একটি বিমান ঘাঁটিতে তাকে শ্রদ্ধা জানায় ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতারা। রাষ্ট্রীয় পতাকায় মোড়ানো কফিন ঘিরে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করেন তারা। ২৭ বছরের কারাবাস শেষে ১৯৯০ সালে মুক্তির পর ১৯৯১ সালে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রধান নির্বাচিত হন ম্যান্ডেলা। প্রিটোরিয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এএনসির নেতা ও দেশের প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা। এছাড়া ছিলেন ম্যান্ডেলার স্ত্রী গ্রাসা ম্যাশেল, সাবেক স্ত্রী উইনি ম্যান্ডেলাসহ এএনসির নেতাকর্মীরা।