গৃহবধূকে সম্পদের লোভ দেখিয়ে ঘর ভাঙার পাঁয়তারা : শোকজ

দামুড়হুদার জগন্নাথপুর শাখার আশা এনজিওর ম্যানেজার হাফিজের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার জগন্নাথপুর শাখার এনজিও সংস্থা আশার ম্যানেজার হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূর ঘর ভাঙার পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকার সাধারণ জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে ম্যানেজার গাঢাকা দিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। এদিকে কর্মএলাকায় সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণসহ জগন্নাথপুর মোমিনপুরের এক গৃহবধূকে সম্পদের লোভ দেখিয়ে ঘর ভাঙার পাঁয়তারার অভিযোগে ম্যানেজার হাফিজুরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর আশার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান তার বিরুদ্ধে এ কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করেন। কারণ দর্শানো নোটিশে বলা হয়েছে, অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানানো যাচ্ছে যে, ‘গত ১০ সেপ্টেম্বর এলও মো. আবুল কালাম আজাদ ছুটিতে থাকায় মোমিননগর গ্রামে রূপসা দল আপনি কালেকশন করতে এসে যে বাড়িতে দল বসে সেই বাড়িতে না বসে, আশার সদস্য নয় কুদ্দুসের স্ত্রী বিথি খাতুনের বাড়িতে যান। বিথি সে সময় তার ঘরের বারান্দায় বসে কাঁথা সেলাই করছিলেন। আপনি তার দিকে এগিয়ে যেয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলার এক পর্যায়ে জিজ্ঞাসা করেন তোমার বাবার বাড়ি কোথায়, সে তখন বলে সরোজগঞ্জ, তখন আপনি বলেন তুমি তো আমার আত্মীয়। তোমার স্বামী কি করে, তখন সে বলে আমার স্বামী বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। তখন আপনি বলেন, তুমি খুব সুন্দর বলে তাকে প্রশংসা করেন এবং তার মোবাইল নম্বরটি চেয়ে নেন। আপনি ওই বিথিকে আরও বলেন, তোমার স্বামীর সাথে অশান্তি করবা, ঝগড়াঝাটি করবা এবং ডিভোর্স দিয়ে দিবা। আমি তোমাকে নিয়ে যাবো এবং বিয়ে করে এসি রুমে রাখবো। তখন বিথি বলে, আমার দশ বছর বিয়ে হয়েছে আমার স্বামী আমাকে তুমি ছাড়া কখনও তুই বলে না, আমি খুব ভালো আছি। আপনি কেন এসব বাজে কথা বলছেন। আপনি ইতঃপূর্বেও বেশ কয়েকবার বিথি নামের ওই গৃহবধূকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিসহ নানাভাবে উত্ত্যক্ত করেছেন। এরপর আপনি বিথির নিকট থেকে এসে সমিতিতে বসতে চান তখন সভানেত্রী বসার জন্য চটের বিছানা দেয়, চটের বিছানা দেখে আপনি রেগে যান এবং বলেন আমার দু তিনটি বাড়ি। আমি এসি রুমে বসি, চটের বিছানায় বসবো না বসার জন্য চেয়ার দেন। তখন সভানেত্রী বলেন, চেয়ারে আমার শ্বশুর বসে আছেন আর চেয়ার নেই তখন আপনি বসার চট ছুড়ে ফেলে দেন। তখন সদস্যর স্বামী ঘরে শুয়ে ছিলেন। সে উঠে এসে বলে, কোন সালারে সমিতির টাকা নিতে এসেছে, চটে না বসলে টাকা দাঁড়িয়ে নিতে বলি। তখন আপনি বলেন, ঘরের ভেতর থেকে কে কথা বলে, তুই কে ঘর থেকে বেরিয়ে আস, তোর চেহারাটা একটু দেখি। এ নিয়ে সদস্যার স্বামীর সাথে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে আপনি তাকে দেখে নেয়ারও হুমকি দেন। এমতাবস্থায় চেয়ারে বসে থাকা সভানেত্রীর শ্বশুর উঠে আসেন এবং পরিস্থিতি খারাপ হলে আপনি বলেন, আপনাদের পুলিশে দেবো এবং মামলা করবো এই বলে মোবাইল করেন এবং পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে আপনি ওখান থেকে কিস্তি আদায় না করে পালিয়ে চলে আসেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সংস্থার ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। উল্লেখিত ঘটনার কারণে কেন আপনাকে আশা ম্যানুয়ালের ১১২ পৃষ্ঠার ৫৬-৫৭ ধারা অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে না তা ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারীর বরাবর লিখিতভাবে জানানোর জন্য বলা হলো।’

এদিকে এ ঘটনায় আশার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজার হাফিজুরের পক্ষ অবলম্বন করেছেন বলেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। বিষয়টি সঠিক তদন্তপূর্বক ম্যানেজারের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে এনজিওর ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করবেন আশার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট ভুক্তভোগী সদস্যদের এমনটাই প্রত্যাশা।