গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বিক্ষোভ সমাবেশ

 

দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি                                                                  

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী পৌর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হবিবুর রহমান হবিকে হুমকি দেয়ার প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন গাংনীর মুক্তিযোদ্ধারা। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আয়োজনে গতকাল বুধবার এ কর্মসূচি পালন করা হয়। বেলা সাড়ে এগারটায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পতাকা হাতে নিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকনকে রাজাকার পুত্র আখ্যায়িত করে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন মুক্তিযোদ্ধারা। মিছিল শেষে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কের দু পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন তারা। স্লোগানে স্লোগানে মুখর অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে প্রতিবাদ জানান অংশগ্রহণকারীরা। মানববন্ধন শেষে উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুন্তাজ আলীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বশির আহম্মেদ বলেন, সাহিদুজ্জামান খোকন হুমকি দিয়ে গোটা মুক্তিযোদ্ধাদের তার বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছেন। তাই দলের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি করেন তিনি।

বক্তৃতায় গাংনী পৌর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হবিবুর রহমান হবি বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকনের পিতা তেরাইল গ্রামের আব্দুল গনি রাজাকার ছিলেন। তাই খোকনকে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে দেয়া যেতে পারে না। গত ১৬ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত হলে আমি প্রতিবাদ জানায়। এর জের ধরে তিনি গত কয়েকদিন থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে নানা রকম হুমকি-ধামকি দিয়ে চলেছেন। ঠ্যাং ভেঙে দেয়াসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার কথা বলে বেড়াচ্ছেন তিনি। এদিকে বক্তৃতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান একজন ভালো মানুষ। আ.লীগ নেতৃবৃন্দ তার দফতরে গিয়ে সে দুর্ব্যবহার করেছেন তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান মুক্তিযোদ্ধারা।

সভাপতির বক্তৃতায় গাংনী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুন্তাজ আলী বলেন, হুমকির বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাই সাহিদুজ্জামান খোকনকে দল থেকে বহিষ্কার ও তার সাজা দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এক সপ্তার মধ্যে দল যদি তার বিরুদ্ধে কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হবে। অভিযোগের বিষয়টি মিথ্যা দাবি করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরি কাম প্রহরী নিয়োগের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অপসারণ দাবি করে আমরা সময় বেঁধে দিয়েছি। এ আন্দোলনের পাল্টা হিসেবে একটি পক্ষ মুক্তিযোদ্ধাদের মাঠে নামিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের আমি সম্মান করি। তাদের সাথে আমার কোনো বিরোধ কিংবা শত্রুতা নেই।