গাংনীর তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামে ৪ বাড়িতে ডাকাতি : এলাকায় আতঙ্ক কমেনি

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তী তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নে ডাকাত আতঙ্ক কিছুতেই কাটছে না। অব্যাহত ডাকাতির ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। রাত যেন তাদের কাছে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি বয়ে আনছে। পর্যাপ্ত পুলিশ টহলের পরও কিছুতেই থামছে না ডাকাতদলের অপতৎপরতা। গত বৃহস্পতিবার রাতেও তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের ৪ বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। দুটি বোমার বিস্ফোরণ এবং অবিস্ফোরিত দুটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তী ওই গ্রামে রাত ১টার দিকে ১৫/২০ জনের অস্ত্রধারীরা হানা দেয়। গ্রামের ইন্তা হক, আকরাম হোসেন, ইকরাম হোসেন ও সেলিম হোসেনের বাড়ির লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, সোনার গয়না, মোবাইলসেটসহ ২০/২৫ হাজার টাকার মালামাল লুটে নেয়। প্রতিরোধের মুখে দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতদলের সদস্যরা। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। ইন্তা হকের বাড়ির কাছ থেকে অবিস্ফোরিত দুটি বোমা উদ্ধার করে পুলিশ।

স্থানীয়সূত্রে আরো জানা গেছে, এ এলাকায় যতোগুলো ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে তাতে মালামাল খোয়া গেছে খুব সামান্য। ডাকাতদলের সদস্যরা বাড়িতে ঢুকে যা পাচ্ছে তাই নিয়ে যাচ্ছে। নারীদের কানের দুল কিংবা নাক ফুল কেড়ে নিচ্ছে। তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের মানুষের একতাবদ্ধতা এলাকার মানুষ সবাই জানে। ডাকাতি শুরুর খবর পেয়ে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে প্রতিরোধ করায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় ডাকাতদলের সদস্যরা। তবে বোমা বিস্ফোরণের কারণে গ্রামবাসী তেমন কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারছে না। সরকারের শেষ সময়ে এসে এতোগুলো ডাকাতির ঘটনা সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য হচ্ছে কি-না তা খতিয়ে দেখার দাবি জানালেন তেঁতুলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা। তিনি আরো জানান, শুক্রবার রাত থেকে করমদি, গরিবপুর ও তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামে গ্রাম প্রতিরক্ষা দলের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শুধু পাহারা নয়, ডাকাদের প্রতিরোধে সব ব্যবস্থা গ্রামবাসী নিয়েছে বলে জানান তিনি। দু-একদিনের মধ্যে তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সব গ্রামেই গ্রাম প্রতিরক্ষা দলের পাহারা শুরুর কথা জানালেন তিনি।

তেঁতুলবাড়িয়ার পার্শ্ববর্তী গরিবপুর গ্রামে গত মঙ্গলবার রাতে ডাকাত প্রতিরোধেকালে ডাকাতদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন গরিবপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়া। বোমায় আহত হন গ্রামের আরো তিনজন। হত্যাকাণ্ড এবং আগের কয়েকটি ঘটনায় এলাকার মানুষ এমনিতেই নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। এর মধ্যে তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের এ ঘটনা এলাকার মানুষের মাঝে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। যদিও পুলিশের পর্যাপ্ত টহল রয়েছে তারপরেও স্বস্তি পাচ্ছেন না এলাকার মানুষ।

তবে যেকোনো মূল্যে ডাকাদলের সদস্যদের গ্রেফতার ও এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে পুলিশের দৃঢ় ভূমিকার কথা জানালেন গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুদুল আলম। তিনি গতরাতে দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে জানিয়েছেন, গতকাল শুক্রবার বিকেলে গরিবপুর গ্রাম থেকে সন্দিগ্ধ একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডাকাদের গ্রেফতারে পুলিশের সব রকম অভিযান চলছে।