গাংনীতে পুলিশের অভিযানে সেই দুই বখাটের আত্মগোপন ॥ মামলার প্রস্তুতি

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের সেই দুই বখাটে আত্মগোপন করেছে। বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা তদন্তে মাঠে নেমেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের অভিযানের কারণে মহাদাপটে থাকা বখাটে রাশেদুল ও সরোয়ার পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, গতকাল দুপুরে গাংনী থানার ইন্সেপেক্টর (ওসি তদন্ত) কাফরুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে চাঁদপুর গ্রামের অভিযান চালায়। সপ্তম শ্রেণি পড়–য়া দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা তদন্তে সত্যতা উঠে আসে। তবে গ্রামে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় বখাটে রাশিদুল ও সরওয়ার। তবে তাদেরকে যেকোনভাবে গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অপরদিকে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্লীলতাহানির শিকার দুই ছাত্রীর মধ্যে একজনের বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ে চলা অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষাও দিতে পারছে না ওই ছাত্রী। অপরদিকে লোকলজ্জা ও আবারো বখাটেদের হামলার আশঙ্কায় আতংকিত হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী ও তাদের পরিবার। স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত বখাটে দুই যুবক স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসান আলী ওরফে বড় হাসানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। তারা সারাদিন গ্রামের একটি দোকানের মাচানে বসে আড্ডা দেয়। মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ রয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে অভিযুক্ত দুই যুবক আন্ডারওয়াল্ডের সাথে জড়িত। অপরদিকে হাসান মেম্বারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ভুক্তভোগীদের প্রতিবাদ করা সম্ভব নয়। সামাজিক বাস্তবতায় দুই ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ কিংবা মামলা করতে সাহস পাচ্ছে না। শ্লীলতাহানির ঘটনায় গ্রামজুড়ে চাপা প্রতিবাদ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিদ্যালয় ও কলেজগামী মেয়েদের অভিভাবকদের কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে শ্লীলতাহানির যদি উপযুক্ত বিচার না হয় তাহলে ওই গ্রামের মেয়েরা কিভাবে চলাফেরা করবেন এমন প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন আরো বলেন, ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হবে। দ্রুত মামলা দায়ের করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, রোববার দুপুরে স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্রী বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিলো। গ্রামের সাবেক মেম্বার মৃত হাশেম আলীর স্ত্রী জরিনা খাতুনের বাড়ির কাছে পৌঁছায়। সেখানে আগে থেকে অবস্থানরত রাশেদুল ইসলাম (২২) ও সরওয়ার হোসেন (২৩) দুই ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে জরিনার বাড়ির মধ্যে যায়। ধর্ষণের অপচেষ্টাকালে ছাত্রীদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্ত দ’জন পালিয়ে গেলেও মহাদাপটেই গ্রামে অবস্থা করছিলো।