গাংনীতে পাটক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নারী এমপি – সরকারি মূল্যে চাষিদের কাছ থেকেই পাট কেনা হবে

গাংনী প্রতিনিধি: ৩০৭ সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা আখতার বানু বলেছেন, সোনালী আঁশের অতীত ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এর অংশ হিসেবে পাটের ক্রয়মূল্য ঘোষণা করেছে সরকার। চাষিদেরকে সরকারি এই সুবিধা নিশ্চিত করতেই স্থানীয়ভাবে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। গতকাল সোমবার বিকেলে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার আকুবপুরে সরকারি পাট ক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্ততায় তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

বক্তৃতায় তিনি বলেন, জেলায় এই প্রথম সরকারি পাট ক্রয় কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়েছে। সারাদেশে এবার ৬৫টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সরাসরি চাষি ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সরকার পাট ক্রয় করবে। সেক্ষেত্রে মেহেরপুর জেলায় পাটক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করতে পেরে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব ও জনবান্ধব সরকার আখ্যায়িত করে তিনি আরো বলেন, কৃষকের মাঝে আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারিত হচ্ছে। যার ফলে কৃষি উৎপাদন তরান্বিত হচ্ছে। লাভবান হচ্ছেন দেশের প্রাণশক্তি এই কৃষি ও কৃষক। সরকারের এই ধারা অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেজাউল করিম বান্টু। অতিথি ছিলেন স্টার জুট মিলস লিঃ সহকারী ব্যবস্থাপক (পাট) শামীম হাসান ও মেহেরপুর জেলা পাট পরিদর্শক মহাসিন শিকদার। মটমুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন গাংনীর বিশিষ্ট পাট ব্যবসায়ী হাজী আলফাজ উদ্দীন, টোকন মিয়া, ছৈফত আলী, মনিরুজ্জামান আতু, উপজেলা আওয়ামী লীগের পরিবেশ ও বন বিষয়ক সম্পাদক আহসান উল্লাহ মোহন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহি উদ্দীন, কাথুলী ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলজার হোসেন, যুবলীগ নেতা মাসুদ পারভেজ ও গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান রেজা সেন্টু ও পাট চাষি এবং ব্যবসায়ীবৃন্দ। সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) আওতাধীন খুলনার স্টার জুট মিলস গাংনীর আকুবপুর কেন্দ্রে পাট ক্রয় শুরু করেছে। এলাকার চাষি ও ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দরে পাট বিক্রি করতে পারবেন।

স্টার জুট মিলের সহকারী ব্যবস্থাপক (পাট) শামীম হাসান বলেন, ১ হাজার ৬৯০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭৯০ টাকা পর্যন্ত প্রতিমণ পাট ক্রয় করা হবে। সরকারি এই ক্রয় কেন্দ্রে পাট বিক্রি করতে হলে চাষিদের কিছু নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পাট অবশ্যই ভালোভাবে শুকাতে হবে। কোন অবস্থায় ভেজা পাট কেনার সুযোগ নেই। এছাড়াও রাস্তাঘাটে ধুলাবালির মধ্যে শুকনো পাট ক্রয় করা হবে না। পাট হতে হবে পরিষ্কার। একজন চাষি সর্বোচ্চ ৫০ মণ পাট বিক্রি করতে পারবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেসকল চাষিদের কাছ থেকে পাট ক্রয় করা হবে তাদের ব্যাংক হিসাবে টাকা পরিশোধ করা হবে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রটি চালু থাকবে। এরপরেও যদি চাষিদের কাছে পাট থাকে তাহলে তা ক্রয়ের জন্য সময় বাড়ানো হতে পারে। স্থানীয় নিবন্ধিত পাট ব্যবসায়ীরা এই কেন্দ্রে পাট বিক্রি করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে এই প্রথম জেলায় সরকারিভাবে পাট ক্রয় স্থাপন করায় পাট চাষিদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। চাষিদের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা। নারী এমপি সেলিনা আখতার বানুর প্রচেষ্টায় কেন্দ্রটি স্থাপিত হওয়ায় তিনি এলাকার মানুষের শুভেচ্ছায় সিক্ত।