গাংনীতে ঈদের কেনাকাটায় বিপণী বিতানগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

 

মাজেদুল হক মানিক: সেই চিরচেনা দৃশ্য। মেহেরপুর গাংনীর বিভিন্ন শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। কেউ ঢুকছে, কেউবা প্রবেশ পথে। প্রথমে দেখে শুনে পছন্দ করা, তারপর দর কষাকষি অবশেষে ঝুলি পুরো করা। দোকানে দোকানে এমনি দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। দর কষাকষি যাই হোক, অবশেষে ক্রেতা বিক্রেতাদের মুখের হাসি দেখে মনে হয় দুজন দুজনের কতো না আপন। তবে এবার বাজারে সব জিনিসেরই দাম একটু বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা সাধারণ।

প্রতিদিন সকাল থেকেই বিপণি বিতানমুখী মানুষের ঢল শুরু হয়। যা সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে গোটা শহরের মার্কেটগুলোকে প্রাণচঞ্চল করে তোলে। প্রচণ্ড গরম আর ভিড় ঠেলে যারা বেরিয়ে আসছেন তাদের প্রত্যেকের হাতেই দেখা মিলছে শপিং ব্যাগের। কয়েকজন বিক্রেতা জানান, রমজানের প্রথম দিকে বিক্রি তেমন না হলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি অনেক বেড়েছে। সেই সাথে যথেষ্ট বিক্রিও হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে বেচাবিক্রি আরো বেড়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

সরেজমিন বিভিন্ন মার্কেটের দোকান ঘুরে ঘুরে প্রয়োজনীয় ও পছন্দের জিনিস কিনতে দেখা গেছে আগত সব ক্রেতাদের। যেমন পোশাকের দোকানগুলোতে ভিড় চোখে পড়েছে, তেমনি দেখা গেছে জুতো, অলঙ্কার, প্রসাধনীসহ অন্যান্য দোকানগুলোতে। সামনে দিন যতো এগোবে, বিপণি বিতানে ভিড় ততোই বাড়বে। অনেক দোকানির ছিলো না দম ফেলার মতো সামান্য ফুরসত। তবু হাসিমুখে সব কষ্ট সহ্য করে নিচ্ছেন দোকানিরা। এদিকে বরাবরের মতো এবারো পোশাকের দাম বেশি রাখার অভিযোগ উঠে এসেছে অধিকাংশ ক্রেতার মুখে। গত বছরের চেয়ে এ বছর পোশাকের দাম অনেক বেশি। বাজেটের মধ্যে কেনাকাটা করতে না পারায় বা অধিক মূল্যের কারণে পছন্দের পোশাক না কিনতে পারায় অনেককেই আশাহত হতে হয়েছে।

দর নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কোনো মনিটরিং না থাকায় বিক্রেতরা ইচ্ছেমতো দর নিচ্ছেন বলে অভিযোগ কয়েকজন ক্রেতারা। বাজারে মনিটরিং এবং প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান আশা করছেন ক্রেতারা। তবে বাজার মনিটরিং জোরদার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান। জুগিন্দা থেকে আসা জাহাঙ্গীর কবির জানান, গতবারের চেয়ে এবার সব ধরনের পোশাকের দাম বেড়েছে। সাধ্যের মধ্যে পছন্দের পোশাক পাওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।

গাংনী মহিলা কলেজের এথম বর্ষের ছাত্রী সীমা জানান, বান্ধবীদের নিয়ে তিনি থ্রিপিস কিনেছেন। সাথে ওড়না। গত ঈদে যে পোশাকের দাম ছিলো ১২০০ টাকা এবার তার দাম দেড় হাজার টাকারও বেশি। তার পরও কিনতে হচ্ছে কারণ ঈদ বলে কথা। একই অভিযোগ হাড়াভাঙ্গা থেকে আসা রাবেয়া খাতুনের। তিনি দু মেয়ে নিয়ে এসেছেন কেনাকাটা করতে। শাড়ি ও থ্রিপিস সব কিছুরই দাম আকাশচুম্বি বলে জানালেন এ প্রবাসীর স্ত্রী।

শুধু অভিজাত বিপণী বিতানে নয়, ভিড় লক্ষ্য করা গেছে ফুটপাথেও। গত সোমবার বামন্দী বাজারে সাপ্তাহিত হাটের দিন থাকায় গো-হাট সংলগ্ন নিলাম মার্কেটে ছিলো উপচে পড়া ভিড়। অভিজাত বিপণীতে যা পাওয়া যাচ্ছে এখানেও একই নামের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে তবে গুণগত মান একটু কম। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে থাকায় মধ্য ও নিম্নবিত্তরা বেশ খুশি।