গরুভর্তি চলন্ত লাটাহাম্বারের চাকায় পিষ্ট হয়ে মাদরাসাছাত্রী নিহত

বখতিয়ার হোসেন বকুল: দামুড়হুদার লোকনাথপুর ফিলিং স্টেশনের সামনে ওয়াজ মাহফিলের প্রচার গাড়ি থেকে পিচরোডে ছুড়ে ফেলা লিফলেট কুড়াতে গিয়ে গরুভর্তি চলন্ত লাটাহাম্বারের নিচে পড়ে কানিজ ফাতেমা নূপুর (৭) নামের এক মাদরাসাছাত্রী নিহত হয়েছে। সে লোকনাথপুর ফিল্ডপাড়ার আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে এবং লোকনাথপুর আইডিয়াল প্রি-ক্যাডেট মাদরাসার ২য় শ্রেণির ছাত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-যশোর সড়কের লোকনাথপুর ফিলিং স্টেশনের সামনে শিশুছাত্রী নূপুর ওয়াজ মাহফিলের প্রচার গাড়ি থেকে পিচরোডে ছুড়ে ফেলা লিফলেট কুড়াতে যায়। এ সময় শিয়ালমারী পশুহাট অভিমুখে যাওয়া গরুভর্তি একটি চলন্ত লাটাহাম্বার তাকে পেছন দিক থেকে ধাক্কা মারে। সে ওই লাটাহাম্বারের চাকায় পিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার সময় পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। বিকেল ৫টার দিকে শিশুছাত্রী নূপুরের ময়নাতদন্ত ছাড়াই জানাজার নামাজ শেষে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুর ফিল্ডপাড়ার কৃষক আব্দুল কুদ্দুসের একমাত্র মেয়ে লোকনাথপুর আইডিয়াল প্রি-ক্যাডেট মাদরাসার ২য় শ্রেণির ছাত্রী নূপুর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মাদরাসা থেকে বাড়ি আসে এবং বই খাতা রেখে লোকনাথপুর বাসস্ট্যান্ড পাড়াস্থ নানির বাড়ি যাচ্ছিলো। এ সময় লোকনাথপুর তেলপাম্পের সামনে একটি ওয়াজ মাহফিলের প্রচার গাড়ি থেকে কিছু লিফলেট ছুড়ে ফেলে। নূপুর পিচরোড থেকে ওই লিফলেট তুলতে গেলে দামুড়হুদা অভিমুখ থেকে শিয়ালমারী পশুহাটগামী গরুভর্তি একটি চলন্ত লাটাহাম্বার তাকে পেছন দিক থেকে ধাক্কা মারলে সে ওই লাটাহাম্বারের নিচে পড়ে চাকায় পিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন গরুভর্তি ওই লাটাহাম্বারটি আটক করে এবং আহত শিশুছাত্রী নূপুরকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার সময় পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। দুপুরে হাউলী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ মিন্টু, লোকনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিল্লুর রহমান খোকনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের মধ্যে আপোষ মীমাংসা শেষে বিকেলে ওই শিশুছাত্রীর লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়। দু ভাই-বোনের মধ্যে নিহত নূপুর ছিলো বড়। এদিকে একমাত্র কন্যার অকাল মৃত্যুতে মা ডলি খাতুন, বাবা আব্দুল কুদ্দুসসহ আত্মীয়-স্বজনদের কাঁন্না আর আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। নূপুরকে হারিয়ে স্বজনদের মধ্যে নেমে আসে শোকের মাতম।