কয়েন টাকা নিয়ে জনসাধারণের ভোগান্তি শেষ হচ্ছে না

 

ঝিনাইদহের ব্যাবসায়ীরা ধাতবমুদ্রা নিয়ে মহা বিপাকে : কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ ৬ উপজেলায় ১, ২ ও ৫ টাকার কয়েন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যাবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।  সরকারি কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও কয়েন টাকা নিতে আপত্তি জানাচ্ছে খুচরাসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ীরা। মানুষ কয়েন টাকা নিয়ে পড়েছেন মহাবিপাকে।

মুদিদোকান, খুচরা পসরার দোকান, মিষ্টির দোকান, যাতায়াতের ভাড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কয়েন নিয়ে শুরু হয়েছে ভোগান্তি। ১ টাকা, ২ টাকা কয়েন বা নোট এতোদিন সরকারি মদ্রা হিসেবে প্রচলিত ছিলো। কিন্তু ২ টাকার ক্রয়ক্ষমতা আগের চেয়ে হ্রাস পাওয়ায় সরকার ৫ টাকার মুদ্রাকে সরকারি মুদ্রা ঘোষণা করতে যাচ্ছে।

মুদি দোকানিরা জানান, ধাতবমুদ্রা বা কয়েন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছেন তাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কয়েন নিতে বাধ্য হওয়া সম্পর্কে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, অসংখ্য পণ্য রয়েছে যেগুলো বিক্রি করতে হলে ১ থেকে ৫ টাকার কয়েন ছাড়া বেচা-কেনা করা সম্ভব নয়। কিন্তু মহাজন ও ব্যাংক তা নিতে নারাজ। এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজর নেই। ১৯৭৪-৭৫ সালে বাজারে প্রচলিত মোট অর্থের মধ্যে সরকারি মুদ্রার পরিমাণ ছিলো ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছর শেষে যা দশমিক ৯ শূন্য শতাংশে নেমে এসেছে। ৫ টাকা মূল্যমানের নোট ও কয়েনগুলোকে সরকারি মুদ্রায় রূপান্তর করা হলে সরকারি মুদ্রার পরিমাণ বাজারে প্রচলিত মোট মুদ্রার ১ দশমিক ৫ শূন্য শতাংশে উন্নীত হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি ব্যাংকের দুজন উচ্চ পদের কর্মকর্তা জানান, গত ঈদে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিটি ব্যাংককে নতুন নোটের পাশাপাশি অনেকটা বাধ্যতামূলক ধাতব মুদ্রা বা কেয়েন দেয়। যার পরিমাণ কমপক্ষে ২ লাখ টাকা। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক কখনও এমনটি করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েনগুলো বাতিল ঘোষণা না করলেও মানুষ এগুলো আর নিতে চাচ্ছেন না। প্রায় সবখানেই এই কয়েনগুলো দেয়া-নেয়া নিয়ে প্রকট সমস্যা চলছে।

শৈলকুপার হাটবাজার সহ ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কয়েন দেখলেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে লেগে যায় বাগবিত-া। কোনো পক্ষই এসব ধাতব মুদ্রা নিতে রাজি নয়। এমনকি ব্যাংকগুলো গ্রাহককে এসব ধাতবমুদ্রা সরবরাহ করলেও সিংহভাগ ব্যাংকই সেই মুদ্রা বা কয়েন গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। অবস্থা দেখে মনে হয়, সচল তবু কয়েনগুলো অচল! সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে ১ থেকে ৫ টাকার ধাতবমুদ্রা বা কয়েন সম্পর্কে কথা হলে এমনই সব তথ্য উঠে আসে।

উল্লেখ্য, ছেঁড়া, ফাটা ও ময়লাযুক্ত নোটের বিনিময় মূল্য প্রদান এবং ধাতবমুদ্রা গ্রহণ ও বিতরণ না করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে সর্তক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে জারি করা সার্কুলারে এ সতর্কতা জানানো হয়। ১, ২ ও ৫ টাকার কয়েন নিয়ে বিপাকে পড়া মানুষেরা স্থানীয় সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।