কোরবানি সামনে রেখে গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত মেহেরপুরের খামারিরা

 

৩৮৬টি বাণিজ্যিক খামারসহ পারিবারিকভাবে পালন করা ৩১ হাজার ৪৪০টি গরু প্রস্তুত

মেহেরপুর প্রতিনিধি: কোরবানি সামনে রেখে গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেরপুরের খামারিরা। প্রাকৃতিক খাবার ব্যবহার করে গরু মোটাতাজা করছেন তারা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত গরুর পরিচর্যায়। তবে কেমিক্যালযুক্ত বিভিন্ন খাবার ও ওষুধ ব্যবহার করে গরু মোটাতাজাকরণের অপপ্রচার ও ভারত থেকে গরু আমদানির কারণে কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ার শঙ্কায় চিন্তিত খামারিরা। এদিকে ক্রেতাদের পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে পশু ক্রয় ও কোরবানি করার পরামর্শ প্রাণি বিশেষজ্ঞদের।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের হিসাব মতে, এবারের কোরবানি ঈদের জন্য ৩৮৬টি বাণিজ্যিক খামারসহ পারিবারিকভাবে পালন করা ৩১ হাজার ৪৪০টি গরু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব গরু স্থানীয় হাট ছাড়াও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হবে। ধানের বিচুলি, কাঁচা ঘাস, খৈল, গমের ভুসি, ছোলা, ভাত, চালের কুঁড়া ইত্যাদি প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করেছেন। এ ছাড়াও খামারিদের দাবি, কোরবানি সামনে রেখে কোনো ক্রমেই যেন বৈধ ও অবৈধ পথে ভারতীয় গরু আমদানি না করা হয়। তাছাড়া শহরকেন্দ্রিক মানুষের মাঝে গরু মোটাতাজাকরণে স্টেরয়েড ও হরমোন ব্যবহার করা হচ্ছে- এমন অপপ্রচারেও অনেকেই মোটা গরু কিনতে চান না। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে খামারি ও পশু পালনকারীরা গরু পালনে উৎসাহ হারাবেন।

গাংনীর মালসাদহ গ্রামের খামারি ইনামুল হক জানান, তার খামারে ১৩টি নেপালি জাতের গরু আছে। ক্ষতিকারক ইনজেকশন ও ট্যাবলেট ব্যবহার করে গরু মোটাতাজা করলে ঝুঁকি থাকে। অনেক সময় গরু মারাও যায়। ফলে ঝুঁকি না নিয়ে দেশীয় পদ্ধতিতেই গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। বাওট গ্রামের মহিবুল জানান, তিনি ১০ বছর ধরে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন। এবার নেপালি, হরিয়ানা ও দেশি জাতের ৪১টি গরু পালন করছেন। দেশি খাবার খাওয়াচ্ছেন তিনি। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ভেটেরিনারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সাবেক অধ্যক্ষ অরবিন্দ শেখর দে জানান, মোটা গরু মানেই হরমোন বা স্টেরয়েড দ্বারা মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে- এ ধারণা ঠিক নয়। একটু চেষ্টা করলেই কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজাকরণ গরুগুলো চিনতে পারবেন ক্রেতারা। এসব গরুর শরীরে আঙুল দিয়ে চাপ দিলেই বসে যাবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুশান্ত কুমার হালদার জানান, ঈদ সামনে রেখে কোনো ক্রমেই যাতে সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু না আসতে পারে সেই লক্ষ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া হাটে স্টেরয়েড ও হরমোন ব্যবহারে মোটাতাজাকরণ গরু যেন না তুলতে পারে সেজন্য প্রতিটি হাটে মোবাইলকোর্টসহ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের একাধিক টিম থাকবে।