কোটচাঁদপুরে ইউপি সদস্য কালাম হত্যামামলার আসামি তদন্ত কর্মকর্তা হওয়ায় মামলার কোনোঅগ্রগতি নেই

মহেশপুর প্রতিনিধি: অপহরের ৩ দিন পর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে নিহত ইউপি সদস্য হাফেজ আবুল কালামের স্ত্রী হাসিনা বেগম কোটচাঁদপুর থানার ওসি, দু দারোগাসহ ৮ জনকে অভিযুক্ত করে গত ২৮ এপ্রিল ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন-উপজেলার বলাবাড়িয়া গ্রামের মতিয়ার রহমান কালু, পিং গোলাম হোসেন, মজনুর রহমান, পিং মৃত আ. ছাত্তার, শাহিনূর রহমান দুলাল, পিং ঠাণ্ডু খন্দকার, জাহিদুল মাস্টার, পিং মৃত. আফজেল জোয়ার্দ্দার, এলাঙ্গী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খান, কোটচাঁদপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মিজানুর রহমান মিজান, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলুর রহমান পিপিএম, ঝিনাইদহ বাজারগোপালপুর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এএসআই শিবুপদ দত্ত। বিজ্ঞ আমলী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে কোটচাঁদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলুর রহমানকে বিষয়টি তদন্তপূর্বক ৭ কর্মদিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু গত ১২মে পর্যন্ত আদালতে কোনো প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। মামলা পরিচালনাকারী বিজ্ঞ আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ১৫মে মামলার ধার্য তারিখ আছে। ওই তারিখ পর্যন্ত তারা পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করবেন।

এদিকে আদালত কর্তৃক অভিযুক্ত ওসির নিকট তদন্ত দেয়ায় বাদী নিহত কালামের স্ত্রী হাসিনা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যসহ এলাকার সচেতন মানুষ হতবাক হয়েছেন। গত ১৮ এপ্রিল সকাল ১১ দিকে কোটচাঁদপুর উপজেলার বলাবাড়িয়া গ্রামের জামায়াত নেতা ইউপি সদস্য হাফেজ আবুল কালামকে বাড়ির পাশ থেকে গ্রামের মানুষের সম্মুখে শাদা পোশাকের একদল অস্ত্রধারী তাকে তুলে নিয়ে যায়। সে সময় আবুল কালামের ছেলে হাফিজুর (১৮) অভিযোগ করেন, কোটচাঁদপুর থানার এসআই মিজানের নেতৃত্বে শাদা পোশাকে একটি নীল রঙের প্রাইভেটকারে তার পিতাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরক্ষণে তারা থানায় খবর নিলে পুলিশ অস্বীকার করে। পরে কালামের পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে কালামকে গুড়পাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে গেলে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয় বলে কালামের স্ত্রী অভিযোগ করেন। সে সময় ভুক্তভোগীরা দাবি করে, তারা গুড়পাড়া ফাঁড়িতে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর একটি সাদা রং-এর মাইক্রোবাসে কালামকে পুলিশ নিয়ে চলে যায় বাজার গোপালপুর পুলিশ ফাঁড়ির দিকে। এরপর দু দিন কালামের খোঁজ মেলেনি। অপহরণের তিন দিনের মাথায় ২১ এপ্রিল সকালে কালামের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় ঝিনাইদহের সদর উপজেলার ২নং মধুহাটি ইউনিয়নের মামুনসিয়া গ্রামের বকুল তলামাঠে। নিহত কালামের স্ত্রী হাসিনা বেগমের অভিযোগ ১ থেকে ৫নং আসামিদের সহযোগিতায় পুলিশ তার স্বামীকে গুলি করে খুন করেছে। এবিষয়ে কোটচাঁদপুর থানার কতব্যরত পুলিশ অফিসার জানায় বিষয়টি তার জানা নেই। ওসি সাহেবের সাথে কথা বলার জন্য বলে।

এদিকে মামলা করার পর থেকে বাদী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। যাদেরকে স্বাক্ষী মানা হয়েছে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করা হচ্ছে স্বাক্ষী না দেয়ার জন্য। একটি সূত্রে জানাগেছে, কয়েকজন স্বাক্ষীকে আসামিপক্ষের লোকজন শাদা কাগজে সহি/স্বাক্ষর করে নিয়েছে ওই মামলার বিপক্ষে কাজে লাগানোর জন্য। বাদীপক্ষ দেশের মানবাধিকার সংগঠন ও সরকারের ওপর মহলের সহযোগিতা কামনা করেছে।