কেরুজ জৈব সারকারখানা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে আজ

উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু : এমপি টগর পরিদর্শন করলেন কারখানা

 

দর্শনা অফিস: কেরুজ চিনিকলের আওতাধীন আকন্দবাড়িয়া জৈব সারকারখানা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে আজ। পরীক্ষামূলক এ কারখানাটি আজ থেকে লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে শুরু হবে উৎপাদন কার্যক্রম। জৈব সারকারখানা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। শিল্পমন্ত্রীর আগমনে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ।

চিনিকল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। মুজিবনগরের সমাবেশ শেষ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু গাড়িবহরযোগে কেরুজ অতিথি ভবনে পৌঁছাবেন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে। বিকেল ৩টার দিকে আকন্দবাড়িয়ায় জৈব সারকারখানার উদ্বোধন করবেন তিনি। কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে জৈব সারকারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য বরাদ্দ দেয় ৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। চিনিকলের দর্শনার পার্শ্ববর্তী আকন্দবাড়িয়া বীজ উৎপাদন খামারের নিজস্ব জমির ওপর সার কারখানা নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় দ্রুত নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ভারতের টরিও চিম টেকনো লিগাল সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের কারিগরি সহায়তায় মেশিনারিজ স্থাপনের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। গত বছরের মে মাসে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করা হয় আকন্দবাড়িয়ার সারকারখানায়। এ কারখানায় বছরে ৯ হাজার মেট্রিক টন সার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে করপোরেশন। এ সার তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে চিনি কারখানার উপজাত প্রেসমাড এবং ডিস্টিলারি কারখানার বর্জে পেন্টওয়াস। কাঁচামাল হিসেবে প্রতিবছর ১৮ হাজার মেট্রিক টন প্রেসমাড ও ৪০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ ¯পেন্টওয়াস ব্যবহার করা হতে পারে। কেরুজ চিনিকল থেকেই প্রেসমার্ড পাওয়া যাবে দু হাজার মেট্রিক টন, বাকি প্রেসমাড দেশের অন্য চিনি কারখানা থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এ দুটি বর্জ সারকারখানায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে অ্যারোবিক কম্পোসটিং পদ্ধতিতে পরিবেশ বান্ধব জৈব সার উৎপাদন করা হচ্ছে। ইতঃপূর্বে এ বর্জ পরিবেশ দূষণের কারণে ফেলা দেয়া হতো মাথাভাঙ্গা নদীতে। এ সার রসায়নিক সারের পরিবর্তে ব্যবহারে চাষিকূল লাভবান হবে। এতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমবে। সাশ্রয়ী হবে বৈদিশিক মুদ্রা। কেরুজ উৎপাদিত জৈব সার ব্যবহারে মাটির ঊর্বরতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, দূর করবে মাটির বিষাক্ততা। সর্বোপুরি জৈব সার ফসলের গুণগত মান বৃদ্ধিতে দারুণ সহায়ক হবে। এরই মধ্যে কেরুজ উৎপাদিত সার বাজারজাতকরণ, মূল্য নির্ধারণ ও গুণগতমান পরীক্ষার অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়া চলছে। এ সার কারখানা পরিপূর্ণভাবে চালু হলে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ রোধ হবে, অন্যদিকে কেরুজ চিনিকলের স্পেন্ট ওয়াসের কারণে মাথাভাঙ্গা নদীর পানি দূষিত হবে না। জৈব সার কারখানা প্রতিষ্ঠায় প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে হয়েছে। অবশেষে স্বপ্ন পূরণের পথে কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার সার কারখানা পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর। এমপি টগরের সাথে ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ, দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজি এবিএম আরশাদ হোসেন, মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মোস্তফা কামাল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাজি সহিদুল ইসলাম, আ.লীগ নেতা আলী মুনসুর বাবু, দর্শনা পুরাতন বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আশরাফুল আলম বাবু, বিল্লাল হোসেন, হবা জোয়ার্দ্দার, যুবলীগ নেতা আজিজুর রহমান বাবু, শেখ আসলাম আলী তোতা, মামুন শাহ, অহিদুল ইসলাম প্রমুখ।