কৃত্রিম ফুল বিক্রিতে ব্যাপক লাভ : যুবকদের বেকারত্ব ঘুচাতে অনুকরণীয় নওগাঁ’র চার যুবক!

 

মহাসিন আলী:ফুল সৌন্দর্যের প্রতীক। ফুল কে না ভালোবাসে?হোক সে প্রাকৃতিক কিংবা কৃত্রিম। সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ বাড়ির আঙিনায় ফুলচাষ করেন। মরসুমি ফুলের টব রাখেন বাড়ির ছাদ কিংবা ঘরের বারান্দায়। আর শিশুদের খেলনা কিংবা ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ঘরের ভেতরে রাখেন কৃত্রিম ফুল। বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের কদর বেড়েছে। তাই ফুল চাষ করে আর কৃত্রিম ফুল বানিয়ে রোজগার করছেন অনেকে। এভাবে দিনে দিনে শহর ও গ্রামে-গঞ্জে গড়ে উঠছে ফুলের নার্সারি। তেমনি অনেকে কাগজ, কাপড় আর প্লাস্টিকের ফুল তৈরির মিনি কারখানা গড়ে তুলেছেন।

বেশ কিছুদিন থেকে মেহেরপুর শহর ও শহরতলীয় গ্রামে গ্রামে বিক্রি হচ্ছে কৃত্রিম ফুল। ফুল বিক্রেতাদের একজন কাবিল হাসান (২২)। তিনি ৭ বছর ধরে কৃত্রিম ফুল বিক্রি করছেন। নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার জামগ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছোট ছেলে কাবিল হাসান। কথা হয় তার সাথে। তিনি জানালেন, তিনিসহ তার প্রতিবেশী আরো তিনজন এসেছেন মেহেরপুরে কাগজ, কাপড় আর প্লাস্টিকের তৈরি কৃত্রিম ফুল বিক্রি করতে।

তাদের কাছে রয়েছে বাহারী রঙের বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম ফুল। যাদের মধ্যে প্রতিটি চরকি ফুল ১০ টাকা, কলস ফুল (ছোট-বড়) ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকায়, প্রতিটি শাপলা ফুল ও সূর্যমুখি ফুল ১০ টাকায় বিক্রি হয়। কাবিল হাসান আরো জানালেন, দৈনিক ৮শ’ থেকে এক হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেন তিনি। যার অর্ধেকই লাভ থাকে তার।

কাবিল হাসান বলেন, তিনি, তার প্রতিবেশী আলীম (২২), মোমিন (২৩) ও আতা (৩৫) মেহেরপুর এসেছেন। তারা ৪ জনে মিলে মেহেরপুর শহরের বাসস্ট্যান্ডপাড়ায় একটি বাসাভাড়া নিয়ে শহর ও গ্রামে তাদের তৈরি কৃত্রিম ফুল বিক্রি করছেন। দু-এক মাস পরে তারা যাবেন বাংলাদেশের অন্য কোনো জেলায় ফুল বিক্রি করতে।

অবিবাহিত কাবিল হাসান বলেন, সংসারে তার রয়েছে মা, ভাই, ভাবী আর ভাতিজা। ভাই কৃষি কাজ করেন। ভাইয়ের অভাবের সংসারে আর্থিক সহযোগিতা করেন তিনি। বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। নিজ বাড়িতে কিংবা বাইরের জেলা শহরের যেখানে থাকেন তারা সেখানেই চলে তাদের ফুল তৈরির কাজ। সকাল ৯টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের অলিতে-গলিতে ও গ্রামগঞ্জে চলে তাদের তৈরি ফুল বিক্রির কাজ।

মেহেরপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার এমপি মোটরস’র মালিক আতিকুজ্জামান বাচ্চু বললেন, ছেলে-বুড়ো সব বয়সের মানুষের কাছে ফুল প্রিয়। হোক সে ফুল প্রাকৃতিক আর কৃত্রিম। সর্বোপরি পরবাসী এ ফুল বিক্রেতারা আমাদের এলাকার বেকার যুবকদের বেকারত্ব ঘুচাতে অনুকরণীয় হয়ে উঠতে পারে বলে তিনি মনে করেন।