কুষ্টিয়ায় ৪০ গ্রাম প্লাবিত : সর্বস্ব হারিয়ে পা বাড়াচ্ছে নতুন গন্তব্যে

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে প্রমত্তা পদ্মা নদী। যেকোনো সময় এ বিপদসীমা অতিক্রম করবে। ইতোমধ্যে নতুন করে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার উপজেলার মোকারিমপুর, বাহাদুরপুর ও জুনিয়াদহ ইউনিয়নের প্রায় ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এই নিয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রাম পদ্মার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে পা বাড়াচ্ছে নতুন গন্তব্যে। বর্তমানে তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। দেখা দিয়েছে নিজেদের পাশাপাশি গো-খাদ্যেরও অভাব। পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার একর জমির পাট, কলা ও পানবরজ।

এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে ভেড়ামারার গোলাপনগর-রায়টা ও দৌলতপুরের রায়টা-মহিষকুণ্ডিন্ত্রণ বাঁধ এখন চরম হুমকির মুখে পড়েছে। যেকোনোসময় এটাও ভেঙেতে পারে। জানা যায়,ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের ছলেমাননগর পুরোপুরি ও ঢাকাপাড়ার অধিকাংশ ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

দৌলতপুরের চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আহম্মেদ জানান, এ ইউনিয়নের ১৮টি গ্রামের ৪০ হাজার বাসিন্দা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব মানুষ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে। তিনি আরো জানান, ইউনিয়নের ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল জানান, মাত্র দুই দিনের পানি বৃদ্ধিতে এ ইউনিয়নের ১৭টি গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভেড়ামারা ইউএনও শান্তিমনি চাকমা জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ভেড়ামারার আশ্রয়ণ প্রকল্প-১ এর বসতবাড়ি সরিয়ে নিতে এবং জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খাঁন জানান, কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার দশমিক ০৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গতকাল শনিবার বিকেলে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১৪ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার মাত্রায়। পদ্মা নদীর পানি প্রবাহের বিপদসীমা হচ্ছে ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। এদিকে পদ্মার পাশাপাশি এর প্রধান শাখা গড়াই নদীতেও অব্যাহতভাবে পানি বাড়ছে।

তিনি আরো জানান, সর্বক্ষণ পানির মাপ পর্যবেক্ষণ করার জন্য কুষ্টিয়ায় একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রতি তিন ঘণ্টা পর পর পানির মাপ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সতর্ক রয়েছে।