কালীগঞ্জে বয়স্ক ভাতা’র কার্ড বিতরণে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ – প্রকৃত দুস্থ অসহায় অস্বচ্ছল ও গরীবরা বয়স্ক কার্ড পাচ্ছে না

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে বয়স্ক ভাতা’র কার্ড বিতরণে আবারও দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকৃত দুস্থ, অসহায়, অস্বচ্ছল ও গরীবদের এ ভাতা’র কার্ড পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে রহস্য জনক কারণে উল্টো হচ্ছে। এদের পরিবর্তে চলতি বছর কার্ড পেয়েছেন কোটিপতি, দোতলা, তিনতলা বাড়ির মালিক, শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীসহ অঢেল ধন-সম্পদের মালিক বনে যাওয়া ব্যক্তিরা। ৩ থেকে ৬ হাজার টাকার বিনিময়ে এসব ধন-সম্পদের মালিকদের বয়স্ক ভাতা’র কার্ড করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া উঠেছে। তবে তাদের কাছ থেকে কারা টাকা নিয়ে এসব কার্ড করে দিয়েছেন তা কেউ বলতে পারছেন না। ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় ব্যক্তিরা অর্থের লোভে তাদের কার্ড করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাদেকুর রহমান বলেন, দুর্নীতি অনিয়নের মাধ্যমে কার্ড বিতরণের খবর পাওয়ার পর পৌর এলাকায় বন্টন করা ৩৫টি কার্ডের সবকয়টি স্থগিত করে রাখা হয়েছে। তাদের ভাতা প্রদান ও বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। ওই কমিটির সদস্যরা ডোর টু ডোর তদন্ত করে ২ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করবেন। সেই সময় পর্যন্ত সকল বয়স্ক ভাতার কার্ড স্থগিত থাকবে। এছাড়া ৩৫ বয়স্ক ভাতা’র কার্ডের টাকা না দেয়ার জন্য ব্যাংক ম্যানেজারকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। গত ২৩ জুলাই কালীগঞ্জ শহরের কলেজপাড়ার তিন তলা বাড়ির মালিক নিশি কান্ত সাহা পেলেন বয়স্ক ভাতা’র কার্ড শিরোনামে সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেই কার্ডটি বাতিল করে একই এলাকার দুস্থ ও অসহায় ইষ্টম দাসকে কার্ডটি প্রদান করেন। সেই ঘটনা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও অভিযোগ পাওয়া গেছে, কোটিপতি আর শহরে একাধিক দোকান-পাটের মালিক ফয়লা গ্রামের (নলডাঙ্গা রোড) শুকুমার মুখার্জী পেয়েছেন বয়স্ক ভাতা’র কার্ড। যার কার্ড নং ২৮১০/১। ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার পর গতকাল সোমবার দুপুরে শুকুমার মুখার্জীর কার্ডটিও বাতিল করেন ইউএনও।

শুকুমার মুখার্জী জানান, বয়স হলেই বয়স্ক ভাতার কার্ড পাওয়া যায়। তাই তিনি কার্ডটি নিয়েছিলেন। কিন্তু যখন জানতে পেরেছেন এ কার্ড দুস্থ, অসহায় ও গরীব মানুষদের জন্য তখন তিনি তা ফেরত দিয়েছেন বলে দাবি করেন। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ নলডাঙ্গা রোডের একটি চায়ের দোকানকারের কাছে তিনি সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিয়ে কার্ডটি করেছিলেন। আর কলেজপাড়ার তিন তলা বাড়ির মালিক নিশি কান্ত সাহা ৬ হাজার টাকা দিয়ে বয়স্ক ভাতা’র কার্ডটি করেছিলেন। তাদের দুজনেরই কার্ডটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাতিল করেন। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ৩৫ বয়স্ক ভাতার কার্ড স্থগিত করে রাখা হয়েছে।