ওমরাহ হজের ভিসা বন্ধ যে কারণে

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি সরকার। নানা অভিযোগে বাংলাদেশ কালো তালিকাভুক্ত হওয়ায় সৌদি আরব এই ভিসা প্রদান একমাস ধরে বন্ধ রেখেছে। কবে নাগাদ আবার ভিসা দেয়া শুরু হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হাজি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সৌদি ত্যাগ না করায় সেদেশের সরকার অলিখিত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে ওমরা ভিসা নিয়ে হাজারো মানুষ সৌদি আরবে রয়েছেন। অনেকেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশে না ফিরে অবৈধভাবে সেখানেই অবস্থান করছেন। সৌদি সরকারও অবৈধদের চিহ্নিত করতে পারছে না। গত ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ওমরাহ পালনের উদ্দেশে সৌদিগামীদের একটি অংশও দেশে ফিরে আসেনি। আর বিষয়টি সৌদি সরকারের নজরে আসামাত্র বাংলাদেশকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ব্যাপারে সৌদি সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি ওমরা ভিসার নামে সৌদি আরবে আদমপাচার করছে। এর মধ্যে রয়েছে সিলেটেরও বেশকিছু এজেন্সি। জানা গেছে, সৌদি আরবের মিনিস্ট্রি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্সের বেঁধে দেয়া নতুন নিয়মে বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ হজযাত্রীদের দেশটিতে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়মে যারা ওমরাহ ভিসায় সৌদি যাবেন তাদেরকে নির্ধারিত এজেন্ট বা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। প্রতি মাসে এর সঠিক হিসাব সৌদি সরকারের কাছে প্রদান করতে হবে।

ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৪০-৫০ হাজার মানুষ ওমরাহ পালন করতে সৌদি গেছেন। তাদের ১৪ থেকে ২৮ দিন মেয়াদের ভিসা ছিল। এদের বেশির ভাগ দেশে ফিরে আসলেও প্রায় দেড় হাজার হাজি দেশে ফিরেননি। তারা অবৈধভাবে এখনও দেশটিতে রয়ে গেছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিদের না ফেরার বিষয়টি জানার পর সৌদি সরকার গত ২২ মার্চ থেকে সম্পূর্ণভাবে ওমরা ভিসা প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে।

অ্যাসোসিয়েশন এজেন্সি হজ বাংলাদেশ-হাবের নেতারা জানিয়েছেন, এক ভাগের নিচে যাত্রীরা অবৈধ হলে সেটি সৌদি সরকার মার্জনা করে। কিন্তু এবার অতিরিক্ত ওমরাহ যাত্রী দেশটিতে রয়ে গেছেন। এজন্য সে দেশের সরকার বাংলাদেশকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এখন নিষেধাজ্ঞা তুলতে হলে অবৈধ হওয়া ওমরা যাত্রীদের চিহ্নিত করে ফেরত আনতে হবে। আর সেটি করাও খুবই কষ্টকর। সৌদি ইমিগ্রেশনে তালিকা চেয়েছে। সেটিও দ্রুত করা যাচ্ছে না। এ কারণে আগামী রমজান মাস নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

নেতারা জানিয়েছেন, প্রতি বছর রমজান মাসেই বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে যান। পবিত্র হজের পরে রমজানই হচ্ছে ওমরাহর মরসুম। এ মরসুমে সিলেট থেকে সাত থেকে আট হাজার মানুষ ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে যান। কিন্তু এ ঘটনার পর বাংলাদেশ আর কোনো ভিসা পাচ্ছে না। এতে করে একদিকে বাংলাদেশের ওমরাহ পালনকারীরা হতাশ হবেন অন্যদিকে লোকসানে পড়বেন ট্রাভেল এজেন্সির মালিকরা। ইতোমধ্যে ওমরা ভিসা প্রাপ্তির জন্য কয়েক হাজার আবেদন জমা পড়ে আছে। ভিসাগুলো দেয়া যাবে না বলে মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে সৌদি দূতাবাস।