একুশের চেতনায় বাঙালির মূল সাংস্কৃতিককে আকড়ে ধরে বাংলা ভাষার প্রতি দরদি হতে হবে

দর্শনায় ৭ দিনব্যাপী একুশে মেলার নাট্যৎসবের উদ্বোধনকালে কেরুজ এমডি এনায়েত হোসেন

দর্শনা অফিস: প্রতি বছরের মতো এ বছরও একুশের মেলার আয়োজন করেছে অনির্বাণ থিয়েটার। ‘অশনিগুলো হোক আনন্দধ্বনি’ এ স্লে¬াগানকে সামনে রেখে ৭ দিনব্যাপী মহান একুশে নাট্যমেলা গতপরশু বুধবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেলার নাট্যৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। মোমবাতি প্রজ্জলনের মধ্যদিয়ে কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এনায়েত হোসেনসহ অতিথিরা নাট্যৎসবের উদ্বোধন করেন। নাট্যৎসবের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন বলেন, একুশ আমাদের মাকে মা বলে ডাকার অধিকার দিয়েছে। শিখিয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। একুশের চেতনায় আমরা পেয়েছি আজকের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব একটি স্বাধীন বাংলাদেশে সবুজের বুকে লাল খচিত একটি পতাকা। একুশ মানে শোকের মাস, হারানো ভাইয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার মাস, দীপ্ত শপথের মাস, সামাজিক অবক্ষয় রোধে দৃঢ় অঙ্গিকার, গোটা বাঙালি জাতির গর্ব ও অহঙ্কারের মাস। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মায়ের কথা রাখতে যে অকুতভয় বাংলার দামাল ছেলেরা, কৃষক, শ্রমিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, পাক শাসকের ১৪৪ ধারা ভেঙে ভাষার দাবিতে নেমেছিলো রাজপথে। পাকিস্তান সরকারের পেটুয়া বাহিনীর ব্রাস ফায়ারে অকাতরে দিয়েছিলো জীবন, ফিরিয়ে এনেছিলো মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার, এ জাতি কখনও ভুলবে না তাদের অবদানের কথা। ভাষা আন্দোলন শুধু মায়ের ভাষায় কথা বলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো না, তা ছিলো রাজনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক বিকাশে লালিত স্বপ্ন। সারাবিশ্ব আজ গর্বভরে পালন করছে মহান আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। গোটা বিশ্বে ধ্বনিত হচ্ছে বাংলাদেশের নাম। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে একুশের প্রেরণা সাহস জুগিয়েছে বাঙালি জাতিকে। শোষন, বঞ্চনা,ও পরাধনীতার শৃঙ্খল ভেঙে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান পেয়েছিলো সর্বভৌম বাংলাদেশ। তাই প্রতি বছরে এ দিনটি যথাযথ মর্যাদার সাথে পালনের মধ্যদিয়ে বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে হবে ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস। সেই সাথে একুশের চেতনায় বাঙালির আদি সংস্কৃতিকে আকড়ে ধরে বাংলা ভাষার প্রতি দরদি হতে হবে। অনির্বাণ থিয়েটারের সভাপতি ফজলুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দর্শনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অ্যাড শহিদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন অনির্বাণ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন। মাহবুবুর রহমান মুকুলের উপস্থাপনায় আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলি, কেরুজ চিনিকলের উপব্যবস্থাপক বাণিজ্যিক শেখ শাহবুদ্দিন প্রমুখ। পরে অনির্বাণ থিয়েটারের পরিবেশনায় মন্থস্থ হয় নাটক হিং টিং ছট।