ঈদ বিনোদনে ঐতিহাসিক মুজিবনগরে হাজারো মানুষের ঢল

 

শেখ শফি: ঈদুল আজহার ৭ দিন ছুটির ফাঁকে বৃষ্টি-বাদল উপেক্ষা করে পরিবার পরিজন নিয়ে বিনোদনের জন্য দর্শনার্থীরা ঐতিহাসিক মুজিবনগরে আসায় সেখানে হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে। কমপ্লেক্সে পর্যটকদের ভিড়ে ঈদ পরবর্তী দু-তিন দিন তিল ধারণের ঠাঁই থাকছে না বিশাল আম্রকাননে। ঈদোত্তর বিনোদনের জন্য মেহেরপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরদের ভিড় জমছে মুজিবনগরে কমপ্লেক্সে। এজন্য সংযোগ সড়কগুলোতে মানুষ ও পরিবহনের ভিড়ে দীর্ঘ যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে। তবে পুলিশি নজরদারী থাকায় সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে।

স্বাধীনতার সুতিকাগার মেহেরপুরের মুজিবনগর। কমপ্লেক্সে নকশা অনুযায়ী পুরো কাজ এখনও শেষ না হলেও বিনোদন পিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষণের যায়গা ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্স। এ ঈদে ভ্রমণ পিয়াসী মানুষের ভিড়ে মুখরিত মুজিবনগর কমপ্লেক্স। কমপ্লেক্সে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর ভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র, স্মৃতিসৌধ, আম্রকানন, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন মুরাল, সরকারি শিশু পরিবার, শাপলা চত্বরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে ঘুরে দেখছে দর্শনার্থীরা। ঈদোত্তর বিনোদনে মুজিবনগরের নৈসর্গিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ এখানে আগত পর্যটকরা।

ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ থেকে আগত আমির হোসেন- বলেন মুজিবনগরে এসে বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রীসভা গঠন ও শপথের স্থান এবং মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর ভিত্তিক মানচিত্র দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ছি। এটাইতো আমাদের স্বাধীনতার সূতিকাগার। এখানে এসে মুক্তিযুদ্ধের অনেক ইতিহাস জানতে পারলাম। খুব ভাল লাগছে।

চুয়াডাঙ্গা থেকে আগত নূর হোসেন জানান, ঈদের ছুটির এক দিনের জন্য স্ব-পরিবারে ঘুরেতে এসে ভিন্ন ধরনের আমেজ পাচ্ছি। সন্তানদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সেক্টর ভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে পারছি। তবে কমপ্লেক্সেটি নকশা অনুযায়ী পরিপূর্ণতা পেলে পর্যটকের সংখ্যা আরো বাড়তো বলে তিনি মনে করেন।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে আসা কলেজ শিক্ষার্থী মোমিনুল ইসলাম জানান- শিশুদের বিনোদনের জন্য কিছু খেলনার ব্যবস্থা রাখা জরুরি। এছাড়া মুজিবনগরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করা দরকার।

মুজিবনগর থানা ইনচার্জ (ওসি) কাজী কামাল হোসেন জানান, ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে আসা হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসুর যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেই জন্য মুজিবনগর কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত আনসার বাহিনীর পাশাপাশি ঈদ পরবর্তী কয়েক দিনের জন্য পুলিশের নজরদারী রাখা হয়েছে।

পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের গুরুত্বপূর্ণস্থানে পুলিশি নজরদারী থাকায় উশৃঙ্খল চালকরা বেপরোয়া গাড়ি চালাতে না পারায় সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশ কমে গেছে। যে কারণে এবারের ঈদে মুজিবনগর দর্শন দর্শনার্থীদের কাছে আনন্দদায়ক হয়ে উঠেছে।