ঈদকে উপলক্ষে জীবননগর সীমান্ত দিয়ে দেদারছে আসছে মদ ও ফেনসিডিলের বিশেষ চালান

 

 

জীবননগর ব্যুরো: ঈদ উপলক্ষে জীবননগর উপজেলার সীমান্ত পয়েন্টগুলো দিয়ে দেদারছে আসছে ভারতীয় মদ ও ফেনসিডিলের বিশেষ চালান। গত ৬ মাস ধরে এ সীমান্ত দিয়ে মাদকদ্রব্য পাচারের ঘটনা উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চোরাচালানীরা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে সীমান্তরক্ষীদের চোক ফাঁকি দিয়ে উপজেলার বেনীপুর, মেদিনীপুর, হরিহরনগর, গয়েশপুর, নতুনপাড়া, ধোপাখালী, রাজাপুর ও শিংনগর সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল ভারত থেকে পাচার করে আনছে। গত ৬ মাসে এ উপজেলা সীমান্তে বিজিবি, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মদ,ফেনসিডিল ও গাঁজা আটক ও ধ্বংস করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সীমান্তের এক মাদকব্যবসায়ী জানায়, এদেশে ফেনসিডিলের ব্যাপক চাহিদাকে কেন্দ্র করে ভারতের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে নকল ফেনসিডিল তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। রাত ১০টার পর থেকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফ সীমান্তের সার্চ লাইটগুলো বন্ধ করে দেয়ার পর উপজেলার ৮টি সীমান্ত এলাকায় তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় দু দেশের মাদক চোরাচালানীদের হাট বসে। পরে এ দেশের মাদককারবারীরা পাচার করে আনা ফেনসিডিল উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে মজুত করে রাখে এবং সময়-সুযোগ বুঝে দুরপাল্লার বাস, ট্রাক ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে পাঠিয়ে দেয়। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্পটে এবং শহরে ফেরি করে ফেনসিডিল বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

উপজেলার বেনীপুর, মেদিনীপুর, গয়েশপুর, ধোপাখালী, উথলী বাসস্ট্যান্ড মোড়, সন্তোষপুর গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে মাদকসেবীরা মোটরসাইকেল নিয়ে গ্রামে ঢুকছে। তারা কোনো বাড়ির সামনে দাঁড়ালেই ওই বাড়ির সদস্যরা তাদের কাছে ফেনসিডিল বিক্রি করছে।

সরকারি একটি গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া তথ্য মতে, উপজেলায় ৮৫ জন মাদকব্যবসায়ী রয়েছে। এরাই মূলত জীবননগর উপজেলার মাদকব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। ঈদ উপলক্ষে এসব মাদকব্যবসায়ী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য প্রতিদিনি পাচার করে আনছে বলে অভিযোগ। এরা হলো- হরিহরনগর গ্রামের মশিয়ার রহমান, নবান ইমরান হোসেন টিটো, হাকিম, সৈয়দ, মফি, চনা, রানা, কালু, জাহিরুল, রেজাউল, আইজুল, রানা ভাংড়ী, ইকবাল, মোনে, বসির, সাইদুর, খোকন, রাজু, সাজু, ফোনে, চান্দু, মোক্তার, আতি, আনার, মাধবখালী গ্রামের ইয়ার আলী, কদর আলী, বুড়ো খাঁ, ফিরোজ, লাভলু, মেজর, নতুনপাড়া গ্রামের মোংলা, কালাম, জামাল, চ্যাগা, দুলো, কদর, সাবু, ডাবলু, রফিকুল, জাফর, সিংনগর গ্রামের সামাদ, শওকত, ছোট, লিয়াকত, হাববুল, রশিদ, হাফিজুর, জিয়া, আন্দুলবাড়িয়া গ্রামের বুড়ি, ফয়জুল, কামাল, সাইদুর, সিদ্দিক, বাবলু, সেনেরহুদা গ্রামের আমিরুল, জীবননগর হাসপাতালপাড়ার মিন্টু, সাইদুর, রাজনগরপাড়ার ভুট্ট, পান্নু, তোতা, গোলাপনগর পাড়ার জাকির, আঁশতলাপাড়ার বাপ্পি, শাহিন, খোকন, শাকিল, মেদিনীপুর গ্রামের আশরাফ, পাথিলা গ্রামের নাজমুল ও নাসির, কালা গ্রামের ইদবারি ও দুদবারী, কাশিপুর গ্রামের কবির, রাজাপুর গ্রামের বাশার, ধোপাখালী গ্রামের জমশের, পাকা গ্রামের মনা, লক্ষ্মীপুর গ্রামের ইউনুছ, মামুন, মনোহরপুর গ্রামের রেজাউল, সন্তোষপুর গ্রামের বাবুল ও গোয়ালপাড়া গ্রামের মোজা।