ইবোলাকবলিত লাইবেরিয়া ফেরত চার প্রবাসীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়নি : আতঙ্ক

 

স্টাফ রিপোর্টার: প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাসকবলিত আফ্রিকার লাইবেরিয়া থেকে অতিসম্প্রতি গৌরনদী ও পার্শ¦বর্তী কালকিনির চার প্রবাসী দেশে ফিরে এলেও ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল গৌরনদীর বাঙ্গীলা গ্রামের রুহুল আমিন সরদার (৩৫) ও তার শ্যালক মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আটিপাড়া (ভাংগা ব্রিজ) গ্রামের ইলিয়াস হাওলাদারের স্ত্রী সেতু বেগম (২৮), শ্যালকের পুত্র তাছরিন ওরফে সেন্টু (৮), কন্যা ঐশি (২) ইবোলা ভাইরাসের ভয়ে গত বৃহস্পতিবার সকালে দেশে ফিরে আসেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তারা বাড়িতে পৌঁছেছেন। তবে তাদের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়ায় ভয়ে তাদের আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাদের সাথে দেখা সাক্ষাত করছেন না।

রুহুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, ইবোলা ভাইরাসের ভয়ে তারা বহুদিন আগ থেকে দেশে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু লাইবেরিয়ার সাথে অন্য দেশের বিমান যোগাযোগ বন্ধ থাকায় তারা দেশে আসতে পারেননি। বহু কষ্টে গত ৪ অক্টোবর তারা ৪ জন লাইবেরিয়া থেকে বিমানে মরক্কো গমন করেন। সেখান থেকে আলজেরিয়া হয়ে দোহায় যান। অতঃপর কাতার কিউ-৬৩৪ নম্বর বিমানে বৃহস্পতিবার সকাল ৫টা ৩০ মিনিটে তারা ঢাকায় পৌঁছেন। বিমানবন্দরে তাদের ৫টি লাগেজ খোয়া গেছে। একই বিমানে লাইবেরিয়া থেকে অন্য এলাকার আরও দু যাত্রী এসেছেন। কোনো বিমানবন্দরেই তাদের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

রুহুল আমিন কর্মসংস্থানের উদ্দেশে দু বছর আগে লাইবেরিয়ায় গমন করেন। জানা গেছে, লাইবেরিয়ার বিভিন্ন স্থানে দু শতাধিক বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছেন। এরমধ্যে গৌরনদী ও কালকিনি এলাকার রয়েছেন ১২ জন। দু মাস আগে আফ্রিকার লাইবেরিয়া, সিয়েরালিয়নসহ কয়েকটি দেশে ইবোলা ভাইরাস দেখা দেয়। এতে প্রায় হাজার দুয়েক লোক মারা যায়। এরমধ্যে লাইবেরিয়ায় মারা গেছে প্রায় ৮শ মানুষ। লাইবেরিয়ায় এ রোগটি মহামারি আকার ধারণ করায় দেশটির সরকার গত আগস্ট মাসের প্রথম থেকে সতর্ক অবস্থা জারি করে। ওই দেশের সাথে সারাবিশ্বের বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিপাকে পড়েন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের শ্রমিকরা। কাজ-কর্ম বন্ধ থাকায় তারা বাসায় বন্দী জীবনযাপন করেন। প্রাণের ভয়ে বাইরে বের হতে পারছেন না, দেশেও ফিরতে পারছেন না। এ কারণে তাদের স্বজনরা মহাদুশ্চিন্তায় পড়েছেন। সূত্রমতে, গত মাস থেকে মরক্কো থেকে ৩০ দিন পর একটি বিমান লাইবেরিয়ায় যাতায়াত করছে। এ কারণে কিছু বাংলাদেশি লোক দেশে আসার সুযোগ পেয়েছেন। তবে শাহজালাল বিমানবন্দরে লাইবেরিয়া থেকে আগত লোকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ইবোলার ব্যাপারে কোনো সতর্কতা অবলম্বন না করায় বাংলাদেশেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন।