ইবিতে ছাত্রলীগ ও বহিরাগতদের মধ্যে উত্তেজনা : দুজন আহত

 

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র ও বহিরাগতকে মারধর করেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। মারধরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও স্থানীয় বহিরাগতদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছুলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা দিকে জিয়া হলের পেছনে লিচুবাগানের নিকট এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। আহতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র জেএম রোকনুজ্জামান ও রনি নামে স্থানীয় এক বহিরাগত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বহিরাগতদের হাতে ছাত্রলীগের এক কর্মী আহত হওয়ার জের ধরে গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র রোকনুজ্জামান ও তার সাথে থাকা বহিরাগত রনির ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগকর্মী শিশির ইসলাম বাবু ও তার সহযোগীরা। লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তারা হামলা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। রামদার আঘাতে বহিরাগত রনির শরীরের কয়েক জায়গায় কেটে গেছে। রনি ও রোকনুজ্জামানকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আহত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রোকনুজ্জামান বলেন, সন্ধ্যার পর আমি ও আমার পরিচিত রনি জিয়া হলের পেছন দিক দিয়ে বঙ্গবন্ধু হলের দিকে যাচ্ছিলাম। আমরা জিয়া হলের পেছন দিক দিয়ে অগ্রসর হয়ে লিচুবাগানে এসে পৌঁছুলে বাবু ও তার সহযোগীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। রনির শরীরের বেশ কয়েক জায়গায় দার কোপ রয়েছে। এদিকে হামলার খবর পেয়ে স্থানীয় বহিরাগতরা রাত আটটার দিকে সংগঠিত হয়ে সাদ্দাম হলের মাঠে অবস্থান নেয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় ছাত্রলীগ ও স্থানীয় বহিরাগতদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত ৯টার দিকে বঙ্গবন্ধু হলের সামনে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ও পুলিশ এসে পৌঁছুলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বহিরাগত ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যায়। ছাত্রলীগ ও বহিরাগতদের মধ্যে প্রায় দু ঘণ্টা উত্তেজনা বিরাজ করলেও প্রক্টর অধ্যাপক ড. ত.ম লোকমান হাকিম ঘটনাস্থলে আসেননি বলে জানা গেছে। ঘটনার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ছাত্রলীগ কর্মী শিশির ইসলাম বাবু বলেন, স্থানীয় কয়েকজন বহিরাগত শনিবার রাতে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মারধর করে। গতকাল রোববার রাতে তাদের একজনকে ক্যাম্পাসে দেখতে পেয়ে আমাদের কয়েকজন কর্মী তাকে মারার চেষ্টা করে। এ সময় আমি তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছি।

ইবি থানার এসআই ইকবাল হোসেন বলেন, একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটু সাময়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে যারা পায়চারা চালাচ্ছে তারা ছাত্রলীগ হোক বা বহিরাগত হোক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ছাত্রলীগের নামে ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহড়াকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া বাজারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কর্মী মেজবাহকে কয়েকজন স্থানীয় বহিরাগত মারধর করে।