আড়াই লাখ টাকার বাজেট নিয়ে মশার বিরুদ্ধে চলমান চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার যুদ্ধের হালচিত্রে পৌরবাসী হতাশ

স্টাফ রিপোর্টার: আড়াই লাখ টাকার বাজেট নিয়ে গত ২২ দিন ধরে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা মশার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামলেও মশার দাপট কমেনি। বরং দিন দিন মশার উৎপাত বেড়েই চলেছে। পৌরসভার মশা নিধনের ওষুধ ও হস্তচালিত যন্ত্র নিয়ে দুজন সৈনিক যুদ্ধ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়ে বলেছেন, পৌরসভার নির্দেশনা মোতাবেক মশক নিধনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অথচ পৌর নাগরিকদের অনেকেই মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বলেছেন, মশা নিধনের ন্যূনতম নজির মিলছে না।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার অধিকাংশ পয়নিষ্কাষণের নালা ময়লায় জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে। এসব জলাবদ্ধতা মূলত মশা উৎপাদনের কারখানা তথা মশা প্রজননের ক্ষেত্র। মশার জীবনচক্র তিন সপ্তাহের হলেও ক্ষুদ্র এ প্রাণের উৎপাতে মানুষ যেনো দিশেহারা। গতবছর গরমের সময় এডিস মশা দেশজুড়ে শুধু আতঙ্কই ছড়ায়নি, অনেকেরই তরতাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। চুয়াডাঙ্গায়ও অনেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। কয়েকজনের মৃত্যু হলেও তা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে সরাসরি স্বীকার করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। শীত মরসুম যেতে না যেতে মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সচেতন নাগরিকদের অনেকেই মশা নিধনের তাগিদ দিতে শুরু করে। খোঁজখবর নিতে গেলে পৌরসভার মেয়র হিসেবে ওই সময়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল মেয়র জানান, আড়াই লাখ টাকার বাজেট নিয়ে মশা নিধনের কর্মসূচি ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে। সে হিসেবে গত ১মার্চ থেকে মশা নিধনে ফকার মেশিন নিয়ে মশার ডিম-লার্ভা মারা শুরু হয়। চুয়াডাঙ্গায় কি মশা কিছুটা হলেও কমেছে? এ প্রশ্ন নিয়ে পৌরসভার যে প্রান্তের যে নাগরিকের সামনেই গতকাল হাজির হয়েছেন এই প্রতিবেদক, সেই নাগরিকই অভিন্ন ভাষায় বলেছেন, পৌরসভার মশা নিধনের কর্মসূচি কাজির গরু কিতাবে থাকার মতোই অবস্থা। কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে তার সুফল মিলছে না। কেনো? এ ক’দিনে মশা নিধনের যন্ত্র নিয়ে তেমন কাউকে এলাকার সাধারণ মানুষ না দেখলেও নিয়োজিত দুজন ভাষা ও সোহেল বলেছেন, প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার ড্রেনসহ জলাবদ্ধ এলাকায় মশা মারার বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে। হস্তচালিত যন্ত্র দিয়ে শেফা নামের বিষ দিয়ে মশা মারা হলেও মশা না কমলে আমাদের তো কিছু করার নেই।
কোন কোন এলাকায় মশা নিধনের কর্মসূচি পালন করা হয়েছে? দায়িত্বপ্রাপ্ত দুজন অভিন্নভাষায় বলেছেন, এসপি লাইন, ডিসির অফিস, সদর উপজেলা অফিস, হাসপাতাল চত্ত্বর, নার্সিং ইনিস্টিটিউট, মাস্টারপাড়া, এতিমখানা সড়ক, শিশু পরিবার প্রাঙ্গণ, স্টেশন এলাকা, মাছের আড়ত পট্টিসহ অনেক এলাকাতেই তো মশা নিধনের ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে। এসব এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে যোগযোগ করতে গেলে তারা বলেছেন, ওরা মশা মেরেছে না বাতাস দুষিত করেছে কে জানে? মশা তো কমেনি। মশা কেনো কমছে না? এ প্রশ্নের জবাবে অনেকেই বলেছেন, মশা নিধনের ওষুধ আদৌও প্রয়োগ করা হচ্ছে কিনা তা যেমন খতিয়ে দেখা দরকার, তেমনই মশা প্রজননের ক্ষেত্রগুলো ভাঙতে না পারলে মশা কমবে না। এদিকে পৌরসভার বিশেষ দৃষ্টি দেয়া দরকার।
মশা নিধনের বিষয়ে গত দুদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়রের সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে পৌর পরিষদের একজন কাউন্সিলর বলেছেন, মশা নিধনের বাজেট ব্যায়ে মশা নিধনের কাজ চলছে।