আলমডাঙ্গা জামজামী গ্রামের স্কুলছাত্রীকে দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার

শিক্ষাদানে শিক্ষকদের অনীহা : লজ্জা আর অপমানে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ
স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার জামজামী গ্রামের এক ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করেছে। গত বুধবার তাকে ডেকে তারই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ডাবলু রহমান নিষেধ করে।
সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোষবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী গত মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ে এসে অ্যাসেম্বিলিতে দাঁড়িয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় সে ছুটি নিয়ে বাড়ি আসতে চাইলে তাকে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ডাবলু রহমান পালা অনুযায়ী তাকে বাথরুম পরিষ্কার করে বাড়ি যেতে বলেন। ওই স্কুল ছাত্রী শিক্ষককে বলে আমি অসুস্থ। তারপরও ডাবলু রহমান জোরপূর্বক তাকে দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করিয়ে নেন। এতে সে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে স্কুলছাত্রীর পিতা প্রতিবাদ করতে স্কুলে এলে প্রধান শিক্ষক সাদ আহমেদ ও সহকারী প্রধান শিক্ষক ডাবলু রহমান তার প্রতি মারমুখো আচরণ করেন। ফলে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। একই সাথে দু’শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীদের দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করার বিষয়ে সরকারি বিধিমালা আছে।
গত মঙ্গলবার এ ঘটনার পর গত বুধবার স্কুলছাত্রী যথারীতি বিদ্যালয়ে গেলে শ্রেণির কেউ তার সাথে কথা বলে না। তারা স্কুলছাত্রীকে জানায়, শিক্ষক ডাবলু তার সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছে। একই সাথে বলেছে, যে কথা বলবে তার পরিস্থিতিও স্কুল ছাত্রীর মতো হবে। এরপর শিক্ষক ডাবলু রহমান স্কুলছাত্রীকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করে দেন। পরে স্কুল ছাত্রী কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে যায়।
একটি জাতীয় দৈনকি সূত্রে জানা গেছে, স্কুলছাত্রীর পিতা বলেন, সামনে মেয়ের পিইসি পরীক্ষা। সহকারী প্রধান শিক্ষক ডাবলু সরাসরি আমার মেয়ে বিদ্যালয়ে যেতে নিষেধ করে দিয়েছেন। বিদ্যালয়ে গেলেও তাকে কোনোকিছু পড়ানো হচ্ছে না। শ্রেণি কক্ষের সহপাঠীদের আমার মেয়ের সাথে কথা বলতে নিষেধ করে দিয়েছে শিক্ষক ডাবুল। এই পরিস্থিতিতে আমার মেয়ে ও লজ্জা আর অপমানে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
প্রধান শিক্ষক সাদ আহমেদ জানান, বাথরুম পরিষ্কারের অভিযোগে স্কুলছাত্রীর বাবা প্রথমে আমাদের বলতে পারতেন। তিনি তা না করে অন্যদের বলেছেন। এ জন্য তার সাথে রাগারাগির ঘটনা ঘটে। সহকারী শিক্ষক ডাবলু রহমান বলেন, আমরা গ্রুপ করে বাথরুম পরিষ্কার করাই। শিক্ষকরাও সেখানে তদারকি করি। স্কুলছাত্রীর বাবা মন্টু সাহা পরবর্তীতে স্কুলে এসে ক্ষমা চেয়ে গেছেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি সাহানুর ইসলাম জানান, ঘটনা শুনেছি। শিক্ষক যা করেছেন তা করতে পারেন না। আগামীকাল শনিবার আমি এর ব্যবস্থা নিবো। উপজেলা শিক্ষা অফিসার মৃনাল কান্তি সরকার জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।