আলমডাঙ্গায় ভেস্তে যেতে বসেছে আবাসন প্রকল্প : বসবাসকারীদের অধিকাংশ চলে গেছেন

স্টাফ রিপোর্টার: নানা সমস্যায় রয়েছে জেলার আলমডাঙ্গায় পারকুলায় সরকারের আবাসন প্রকল্প। ফলে এ আবাসন প্রকল্পের পুরোটাই প্রায় ভেস্তে যেতে বসেছে। এছাড়া দুস্থরা এখনও শীতে সরকারি কম্বল পাননি বলে জানা গেছে। এক সময়ের আবাসনে ভরপুর বসবাসকারীদের এখন আর কেউ নেই। অধিকাংশ পরিবারই চলে গেছেন। ছিন্নমূল কিছু পরিবার যদিও এখনও টিকে আছে কিন্তু সরকারের কোনো সুবিধা তারা পান না। প্রতিবছর সরকারি কম্বল এসে ভরে গেলেও আবাসনের ছিন্নমূলদের পর্যন্ত তা পৌঁছে না গত চার বছর। সুবিধাবঞ্চিত ছিন্নমূল এই মানুষগুলো চলতি বছর হাড়কাঁপানো শীতে অতি কষ্টে রাত ও দিন পার করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর ইউনিয়নের পারকুলা গ্রামে গত ২০০৮ সালে প্রায় ১৫ বিঘা জমি জুড়ে ভূমিহীনদের জন্য আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এতে ১৪টি ব্যারাকে মোট ১৪০টি পরিবারের বসবাসের জন্য প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ১২০ টন চালের বিনিময়ে মাটি ভরাটের কাজ করা হয়। এরপর সেনাবাহিনী আবাসন প্রকল্পটি নির্মাণ করে। এ সময় ১৪০টি ভূমিহীন পরিবার আনন্দ তাদের সন্তানদের নিয়ে আবাসনে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। এরপর থেকে আবাসনে বিভিন্ন এলাকার মাস্তানদের উত্পাত বেড়ে যায়। নেশাখোররা জোর করে আবাসনে আড্ডা বসাতে থাকে। উঠতি বয়সি মেয়েদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকে একেকটি পরিবার। এ সময় আবাসনের প্রতিবাদী পুরুষ মতিয়ার রহমান আড্ডায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ান। ২০১৪ সালে তিনি সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন। এরপর থেকে একটি একটি করে পরিবার আবাসন ছাড়তে থাকে। এভাবে ১০০টি পরিবার আবাসন ছেড়ে চলে গেছে। এখন ৪০টি পরিবার কোনো রকমে টিকে আছে। তবে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা তারা পান না। আবাসনের বাসিন্দা রাকিবুলের স্ত্রী বিউটি খাতুন বলেন, এলাকায় প্রচণ্ড শীত পড়লেও সরকারি কোনো লোক আমাদের কম্বল দেন না। বয়োবৃদ্ধ আলীম উদ্দিন বলেন, মতিয়ার রহমান যখন বেঁচে ছিলেন তখন আমরা কম্বল পেতাম। চার বছর ধরে আর পাই না।
এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান বলেন, প্রথম কোটায় ৫শ কম্বল মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আসলে পারকুলা আবাসনের দুস্থদেরকে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে কালিদাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের বক্তব্য নিতে তার মোবাইলে যোগযোগ করে পাওয়া যায়নি।