আলমডাঙ্গায় দুজনকে বেঁধে মধ্যযুগীয় নির্যাতনের ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গায় দুজনকে বেঁধে অমানুষিক নির্যানের ঘটনায় নির্যাতিত রাফেজা খাতুন আদালতে মামলা করেছেন। গ্রামের মাতবর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাসহ ৯ জনকে আসামি করে সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. আব্দুল হালিম ঘটনার তদন্ত করে আলমডাঙ্গা থানার ওসিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জোড়গাছা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী শিলনের স্ত্রী রাফেজা খাতুনের বাড়িতে আসেন তার দূরসম্পর্কের দুলা ভাই দামুড়হুদা উপজেলার পোতারপাড়া গ্রামের আজিবর মিস্ত্রির ছেলে ওয়াসের আলী। তারা দুজন বাড়িতে গল্প করছিলেন। এ সময় অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে তাদেরকে আটক করে গ্রামের কতিপয় লোক। রাতভর তাদেরকে একসাথে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়। দুজনই রক্তাক্ত জখম হন। সকালে গ্রামে সালিস বসায় গ্রামের লোকজন। তারা রাফেজাকে তার প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করে। এরপর একই দিন বিকেলে তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে রাফেজা ও ওয়াসের আলীকে বিয়ে দেয়া হয়। রাফেজা জানান, তার ঘরে লুটপাট চালায় গ্রামের কতিপয় লোক। তারা তার কয়েক জোড়া কানের দুল, হাতের বালাসহ গয়নাগাটি কেড়ে নেয়। ঘরে থাকা ৪২ হাজার টাকাও লুটে নেয় তারা। এছাড়া সালিসে তাদের কাছ থেকে জরিমানার নামে ১০ হাজার টাকাও নেয়। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার ৯ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার রাফেজা। মামলার আসামিরা হলেন, জোড়গাছা গ্রামের মৃত আলফার ছেলে আমানুল্লাহ, বিল্লালের ছেলে মিশর, মনছেরের ছেলে আবদুল খালেক, আদমের ছেলে শাহাবুল, পিতা অজ্ঞাত সাজেদ মণ্ডল, চাঁদ আলীর স্ত্রী মহিলা খাতুন, আফসারের ছেলে মোশারফ, মৃত আরশাদের ছেলে নুর ইসলাম ও ইবাদতের ছেলে ইসমাইল।
চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমডাঙ্গা আমলি আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. আব্দুল হালিম মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আলমডাঙ্গা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা থানার ওসি শেখ আতিয়ার রহমান বলেছেন, ঘটনার দিন আমি ছুটিতে ছিলাম। তবে জোড়গাছা গ্রামে এ ধরনের একটি ঘটনার কথা আমি শুনেছি।