আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে মোটরসাইকেল ছিনতাই করতে এসে হাতেনাতে ছিনতাইকারী আটক

 

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ পশুহাটস্থ স্কুলপাড়ায় এক কৃষকের বাড়িতে পুলিশ পরিচয়ে মোটরসাইকেল ছিনতাই করতে এসে হাতেনাতে চুয়াডাঙ্গার দুই যুবক আটক হয়েছে। দুজনকে গণধোলাই শেষে মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে এলাকাবাসী। গতকাল দুপুরে পশুহাটের একটি বাড়িতে পুলিশ পরিচয় দিয়ে দুই ছিনতাইকারী মোটরসাইকেল ছিনতায়ের চেষ্টা করে। স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ সময় ছিনতাইকারী দৌড়ে পালিয়ে মাথাভাঙ্গা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এলাকাবাসী তাদের নদীর মধ্যে থেকে ধরে গণধোলাই দিয়ে মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

এলাকাসূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ পশুহাটস্থ খুদিয়াখালী স্কুলপাড়ার ইসমাইলের ছেলে আবুল কালাম ও মহাসিনের বাড়িতে দুই জন যুবক ঢোকে। বাড়িতে ২ মহিলা ছাড়া কোনো পুরুষ মানুষ ছিলো না। তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে বলে তোমাদের নামে মামলা আছে। তাই মোটরসাইকেলটি নিয়ে গেলাম। থানায় এসে যোগাযোগ করবে। কোন থানার পুলিশ তাদের কাছে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ বলে জানাই তারা। ইতোমধ্যে কালাম বাড়িতে পৌঁছে যায়। কালাম জানতে চাই চুয়াডাঙ্গার পুলিশ আলমডাঙ্গা থানার মধ্যে কেন। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারাই সন্দেহ হয়। বাড়ির লোকজনের সাথে তর্ক-বির্তক বাধলে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসে। দুই ছিনতাইকারী দৌড়ে পালিয়ে বাড়ির পাশে মাথাভাঙ্গা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। স্থানীয়রা তাদের নদীতে সাঁতরে আটক করে গণধোলাই দেয়। আটক দুই ছিনতাইকারী তাদের পরিচয় দিতে গিয়ে বলে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মাঝের মাড়ার হেলাল উদ্দিনের ছেলে সাকিব হাসান (৩৫) ও হাটকালুগঞ্জের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে সাহাবুল (৩৪)। সংবাদ পেয়ে মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের আইসি এসআই মহাসিন ও টুআইসি এআসআই জামাল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাদের আটক করে ফাড়িতে নিয়ে যায়। গতকাল রাত ৯টার দিকে তাদের চুয়াডাঙ্গা গোয়েন্দা পুলিশ তাদের কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে পুলিশ সূত্রে জানায়।

এ ব্যাপারে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আশরাফ জানান, ওদের দুইজনকে ডিবি অফিসে নেয়া হয়েছে। আটক দুই জনের মধ্যে সাহাবুলের মোটরসাইকেল সাকিব ও তার চক্র ছিনতাই করে। সাহাবুলকে ফাঁসানো হয়েছে। তার মোটরসাইকেলটি জীবননগর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আটক সাকিব আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর ডিন্ডিকেটের মূল হোতা বলে জানান তিনি।

অপরদিকে আলমডাঙ্গা নিমতলা গ্রামের সগিরের ছেলে আপন অভিযোগ করে বলে, গত পরশু রবিবার বেলা ৩ টার দিকে আমার পাওয়ারটিলার এই চক্রটি ৪০ হাজার টাকায় দরদাম করে। পাওয়ারটিলার সহ আমাকে চুয়াডাঙ্গাতে নিয়ে যায়। চুয়াডাঙ্গা একাডেমী মোড়ের একটি তেল পাম্প থেকে আমাকে বসিয়ে রেখে পাউয়ারটিলার নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে এলাকাবাসী গতপরশু এই আপন কে এই ছিনতাইকারীদের সাথে অনেকই দেখেছে।

এলাকাবাসী আরো জানায়, গতপরশু রোববার এই ছিনতাইচক্রের ৫ জন মুন্সিগঞ্জ পশুহাট চত্বরে এসে ঘুরাঘুরি করছিলো। এই সময় পার-কৃষ্ণপুর গ্রামের এক ফার্মেসি ব্যবসায়ীর মোটরসাইকেলের পাশে ঘুরঘুর করছিলো। ওদের আচরণ ছিলো যথেষ্ট সন্দেহ জনক। গতকাল প্রাইমারী স্কুল মাঠে সকাল থেকে বসে কালাম ও মাহাসিনের বাড়ির দিকে লক্ষ রাখছিল তারা।