আলমডাঙ্গার গাংনীর কালু ২৫ দিনপর বাড়ি ফিরেছেন : অপহরণ নাকি নিজেই আত্মগোপন করেছিলেন জবাব মেলেনি

 

ভালাইপুর প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার গাংনী বাজারপাড়ার হাসানুজ্জামান কালু বাড়ি ফিরে এসেছেন। তিনি দীর্ঘ ২৫ দিন পর গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাড়ি ফেরেন। তিনি কি সত্যিই অপহৃত হয়েছিলেন? নাকি নিজেই আত্মগোপনে ছিলেন জানাতে চাননি হাসানুজ্জমান কালু। ২৫ দিন পর ফিরে আসার খবরে গ্রামের শ’ খানেক নারী-পুরুষ ভিড় জমায় তার বাড়িতে। তবে হাসানুজ্জমান কালু ফিরে আসার পরও তার পরিবারের আতঙ্কের ছাপ কাটেনি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে মাইক্রোবাসযোগে তাকে তুলে নিয়ে যায়।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার গাংনী বাজার পাড়ার নাসির উদ্দীন বিশ্বাসের ছেলে পোল্ট্রি মুরগী ও পানব্যবসায়ী। গত ২৬ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়ি থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। তবে পরিবারের কাছে কোনো পক্ষই কোনো কিছুর দাবি করেনি। কিন্তু কালু ফিরে না আসাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে তার পরিবার। এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে পরিবারের লোকজন।

এদিকে, গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেআর পরিবহন কাউন্টার থেকে ফোন করা হয় কালুর চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলমের কাছে। কালুকে চোখ বেঁধে গাড়ির মধ্যে রেখে গেছে বলে জানানো হয়। জেআর পরিবহনের চুয়াডাঙ্গা কাউন্টার থেকে কালুকে নিয়ে যেতে বলা হয় জাহাঙ্গীর আলমকে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পরিবারের লোকজন কাউন্টার থেকে হাসানুজ্জামান কালুকে বাড়ি নিয়ে যায়। কালু ফিরে আসার খবরে গ্রামের মানুষ তাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় জমায়। প্রথমে হাসানুজ্জমান কালু ও তার পরিবারের লোকজন আতঙ্কে কোনো তথ্যই দিতে চাননি। সংবাদ প্রকাশ করতেও নিষেধ করে তারা।

হাসানুজ্জমান কালু জানান, দীর্ঘ ২৫ দিন আমাকে কোথায় রাখা হয়েছিলো আমি কিছুই বলতে পারবো না। ২৪ ঘণ্টা আমার হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখতো। বাইরের কোনো শব্দই আমি শুনতে পেতাম না। প্রথম দিকে তারা আমার সাথে খারাপ আচরণ করলেও পরে ওই ঘরেই নিয়মিত খাবার ও নামাজ পড়ার সুযোগ দিতো। শুক্রবার সকালে আমার চোখ মুখ বাঁধা অবস্থায় গাড়িতে রেখে যায় তারা। পরে আমি সুপারভাইজারের মোবাইলফোন দিয়ে চাচাতো ভাইকে কল করে আমার অবস্থানের কথা জানায়। বিকেলে আমার বাড়ির লোকজন জেআর কাউন্টার থেকে আমাকে নিয়ে আসে। এ কথাগুলো বলতে বলতে মুক্ত হওয়ার আনন্দের অশ্রু ঝরছিলো হাসানুজ্জামান কালুর চোখে।