আরও আগে লিটনকে হত্যায় ভাড়া করা হয় কসাই সুবলকে

 

স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধার সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটনকে এক বছর আগেই প্রথমবার হত্যার চেষ্টা করেন আরেক সংসদ সদস্য ডা. আবদুল কাদের খাঁনের অন্যতম সহযোগী গ্রেফতার কসাই সুবল চন্দ্র সরকার। গ্রেফতারের পর পুলিশকে দেয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য দিয়েছেন সুবল নিজেই।

পুলিশ জানায়, ২০ বছর আগে সুবলের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জে ডাকাতি ও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সে সময় তার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রও উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি মাংস বিক্রির পাশাপাশি সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করতেন। লিটন হত্যার দায় স্বীকার করা চার ঘাতকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কসাই সুবলকে বৃহস্পতিবার সকালে রংপুরের সেবা ক্লিনিক থেকে গ্রেফতার করা হয়।

তার বাড়ি সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মনমথ গ্রামে। সুবল ওই গ্রামের গৃধর চন্দ্রের ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুবল পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহ-দপ্তর সম্পাদক চন্দন কুমার সরকারের ভগ্নিপতি। চন্দনের মাধ্যমেই আব্দুল কাদের খাঁনের সঙ্গে সখ্য হয় তার। চন্দনের কথামতো আব্দুল কাদেরের পরিকল্পনায় লিটনকে খুন করতে রাজি হন তিনি।

সূত্র জানায়, এমপি লিটন গ্রামের বাড়িতে এলে সন্ধ্যায় বামনডাঙ্গা আওয়ামী লীগ অফিসে যেতেন এবং দীর্ঘ সময় সেখানেই থাকতেন। দীর্ঘ সময় অফিসে থাকার সময়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে লিটনকে অফিসের পাশের একটি টিনশেড টয়লেট ব্যবহার করতে হতো। বছরখানেক আগে একদিন এ সুযোগটা কাজে লাগাতে লিটনকে গুলি করে হত্যার প্রস্তুতি নেন সুবল। সময়মতো সুবল টয়লেটের পাশে অবস্থান নেন। কিন্তু সে সময় পিত্তথলি রোগে আক্তান্ত হন তিনি। ফলে সে যাত্রায় রক্ষা পান এমপি লিটন।

এরপর, লিটনকে হত্যা করতে অন্য কিলার খুঁজতে থাকেন আব্দুল কাদের খাঁন। শেষে হান্নান, মেহেদী, শামীম ও রানাকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কিলার বানান। এদিকে লিটনের বাড়িতে নিয়মিত খাসির মাংস সরবরাহ করতেন কসাই সুবল। সরবরাহের আড়ালে তিনি মূলত লিটনের অবস্থান কাদের খাঁনকে দিতেন। চন্দন কুমার সরকারও লিটনের খোঁজখবর কাদেরকে দিতেন।

সুবলের এসব স্বীকারোক্তির বিষয়ে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) রবিউল ইসলাম বলেন, কসাই সুবল এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত। হত্যার দায় স্বীকার করা চার কিলার আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে সুবল সম্পর্কে অনেক তথ্য দিয়েছেন। গ্রেফতার সুবলকে রিমান্ডে এনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রংপুর সেবা ক্লিনিকে পিত্তথলি অপারেশনের জন্য ভর্তি হন কসাই সুবল। পরে চার ঘাতকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সুবলকে নজরবন্দি করে পুলিশ। এরপর হাসপাতাল থেকে ২ মার্চ ছাড়া পান সুবল। তখন তাকে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
গত ডিসেম্বরে বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সাহাবাজ গ্রামে নিজের বাড়িতে গুলি করে মারা হয় এমপি লিটনকে।