আমগাছে নারীর ঝুলন্ত লাশ : ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন

সন্তানের মা হতে না পারায় স্বামীর গঞ্জনা নিয়ে পিতার বাড়ি ফেরার পর নিখোঁজ
স্টাফ রিপোর্টার: নিখোঁজের ৫ দিনের মাথায় চুয়াডাঙ্গা জাফরপুর খলিফাপাড়ার সীমা খাতুনের (২৪) মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকার সাড়ে ১০টার দিকে লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পুলিশ জাফরপুরস্থ বিজিবি ক্যাম্পের অদূরবর্তী আমবাগানের একটি আমগাছ থেকে লাশ উদ্ধার করে। সীমা খাতুনের ৭ বছরের সংসারে সন্তান আসেনি। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্প্রতি মনমালিন্য দেখা দেয়।
লাশ উদ্ধারের সময় স্থানীয়দের মধ্যে নানা সন্দেহ দানা বাধলেও পুলিশের সম্মতি নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় বিরূপ সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলেছে, গাছের ডারে যেভাবে ওড়না দিয়ে বাঁধা ও ঘাড় কাত করে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহ ছিলো তা সন্দেহজনক। গলায় ফাঁস দেয়া নাও হতে পারে। অবশ্য চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই সুপ্রভাত খানেকটা জোরদিয়েই বলেন, নারী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যাই করেছে। আত্মহত্যারই আলামত পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের জাফরপুর খলিফাপাড়ার বাবলুর রহমান খলিফার মেয়ে সীমা খাতুনের সাথে আনুমানিক ৭ বছর আগে জীবননগরের সীমান্ত ঘেঁসা মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গার সরোয়ার হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সংসার শুরু করে। স্বামী-স্ত্রী ঢাকায় পাড়ি জমায়। সীমা দর্জির কাজ করতো। কিছুদিন আগে স্বামী-স্ত্রী বাঘাডাঙ্গায় ফেরে। সন্তানের মা হতে না পারায় সীমাকে নানা গঞ্জনা শুনতে হয়েছে। এক পর্যায়ে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে সীমা তার পিতার বাড়ি চুয়াডাঙ্গার জাফরপুরে ফেরে। ৫দিন আগে ঢাকায় যাচ্ছি বলে বাড়ি থেকে ব্যাগ নিয়ে বের হয়। এ ক’দিন নিখোঁজ ছিলো সীমা। গতকাল সকালে জাফরপুর বিজিবি ক্যাম্পের ১ নং গেটের অদূরবর্তী মামুন অর রশিদ আঙ্গুরের আমবাগানের একটি গাছে ঝুলন্ত লাশ দেখে স্থানীয়দের মধ্যে কৌতুহল দানা বাধে। ভিড় জমে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। আমগাছের পাশেই ছিলো ব্যাগ। তাতে বোরকাসহ সামান্য কিছু পোশাকসহ আনন্দ পরিবহনের একটি কোচের টিকেট পাওয়া গেছে।
সীমার পিতা-মাতাসহ নিকটজনেরা লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের জন্য আবেদন করে। পুলিশের নমনীয়তায় শেষ পর্যন্ত ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।