আপিল বিভাগের রায় : প্যানেলভুক্ত শিক্ষক নিয়োগের আদেশ বহাল

স্টাফ রিপোর্টার: রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য প্যানেলভুক্তদের নিয়োগ দিতে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত ১৮ জুন হাইকোর্ট এক রায়ে প্যানেলভুক্ত ১০ শিক্ষককে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে নিয়োগ দিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়; কিন্তু এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেয়। আইনজীবীরা জানান, আপিল বিভাগের এ রায়ের ফলে প্যানেলভুক্ত ১০ জনকে নিয়োগের আইনি বাধা কাটল। প্যানেলভুক্তদের মধ্যে হাইকোর্টে যারা রিট করেছেন তারাও এই রায়ের সুফল পাবেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শূন্য পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উপজেলা ভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তির ৩ নম্বর শর্তে উল্লেখ করা হয়। এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ওপর ভিত্তি করে ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৪২ হাজার ৬১১ জনকে নিয়োগের লক্ষ্যে একটি প্যানেল তৈরি করা হয়।

এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর এক পরিপত্রে ইউনিয়ন ভিত্তিক নিয়োগের কথা জানায়। সে সময় প্রায় ১৪ হাজারের মতো নিয়োগও দেয় সরকার। এতে করে মেধা তালিকার প্রথম দিকে থেকেও অনেকে নিয়োগ বঞ্চিত হন। ২০১৩ সালে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। এরপর নিয়োগ দেয়া বন্ধ করে দেয় সরকার। ফলে হতাশ হয়ে পড়েন চাকরি প্রত্যাশীরা। এরপর নিয়োগ বঞ্চিত ও প্যানেলভুক্ত শফিকুল ইসলাম, হাফিজ আল আসাদসহ নওগাঁর দশজন শিক্ষক ইউনিয়ন ভিত্তিক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন। ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৮ জুন রিট আবেদনকারী দশ জনকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়ে ইউনিয়ন ভিত্তিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ অন্যরা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের করে। আদালতে রিটকারীদের পক্ষে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক শুনানি করেন। তাকে সহায়তা করেন ব্যারিস্টার ইমাম হোসেন তারেক ও অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্ল্যাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল আমাতুল করীম। শুনানি শেষে গতকাল দেশের সর্বোচ্চ আদালত ওই লিভ আবেদন খারিজ করে দেয়।

এদিকে হাইকোর্ট গত ১৫ ডিসেম্বর পৃথক তিনটি রিটের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে ২৬৮ জন প্যানেল শিক্ষককে নিয়োগের নির্দেশ দেয়। এছাড়া প্যানেলভুক্ত প্রায় দুই হাজার শিক্ষক আইনের আশ্রয় নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তাদের নিয়োগ প্রশ্নেও হাইকোর্ট রুল জারি করেছে। এখন ওই রুল হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।