আনুষ্ঠানিকভাবে বয়লারে স্লো-ফায়ারিং

 

দর্শনা অফিস: চুয়াডাঙ্গার ঐহিত্যবাহী দর্শনা কেরুজ চিনিকল এ অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি। প্রায় ৮০ বছর বয়সী কেরুজ চিনিকলটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললেও সরকারের নেকনজরে তা বদলাতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে মিলের আধুনিকায়নের কাজ শুরু করা হয়েছে। যে কারণে কিছুটা হলেও করুণদশা থেকে উন্নিত হয়েছে মিলটির। প্রতি বছর লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে যেমন মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয়, তেমনিভাবেই চরম হতাশা নিয়েই শেষ করা হয় মাড়াই কার্যকম। সেই সাথে চিনি বিক্রির বিড়ম্বনায় পড়তে হয় চিনিকল কর্তৃপক্ষকে। এবার চিনির বোঝা মাথায় না থাকলেও লোকসানের বোঝা রয়েছে। লোকসান পুষাতে না পারলেও লাভের আশায় এবারের আখ মাড়াই মরসুমের শুরু করছে মিলকর্তৃপক্ষ। সে লক্ষ্যে নানামুখি প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সম্প্রতি আখচাষিদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণের মধ্যদিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছুতে না পারলেও চিনিকল কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। বারবার লোকসান গোনা এ মিলটি এবার লাভের আশায় পথচলা শুরু করেছে। আগামী ২৫ নভেম্বর কেরুজ চিনিকলের ২০১৬-১৭ আখ মাড়াই মরসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। গতকাল শুক্রবার মিলের বয়লারের স্লো-ফায়ারিং করা হয়েছে। দুপুর দুটোর দিকে ৪ নং বয়লার হাউজে আনুষ্ঠানিকভাবে স্লো-ফায়ারিং করেন মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম আরশাদ হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- মিলের মহাব্যবস্থাপক (কারখানা) আনোয়ার কবির, মহাব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারি) নওশেরুজ্জামান, মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আরাউদ্দিন, কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলী, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এবারের মাড়াই মরসুমে ১ লাখ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে সাড়ে ৭ হাজার মেট্রিকটন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কেরুজ চিনিকলের নিজস্ব ২ হাজার ৭৫ একর জমিসহ ৭ হাজার ৬২০ একর জমিতে এবারের মরসুমে রয়েছে ৮৫ হাজার মেট্রিকটন। ফলে ৯৬ মাড়াই দিবসে ৮৫ হাজার মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে প্রায় ৬ হাজার মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন করা হতে পারে। চিনি আহরণের গড়হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক। গত মাড়াই মরসুমের শেষে কেরুজ চিনিকলের ৪ মরসুমের গোডাউন ভর্তি ছিলো প্রায় ৮০ কোটি টাকার। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রায় ৬৬ কোটি টাকার চিনি বিক্রি করা হয়েছে। এখনো মিলের গোউডনে অবিক্রিত রয়েছে ২ হাজার ৩শ মেট্রিকটন চিনি। যার মূল্য প্রায় ১৩ কোটি টাকা। কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম আরশাদ হোসেন বলেছেন, এ মরসুমে লোকসান কাটিয়ে মুনাফা অর্জনের জন্য মিল কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে নানামুখি পদক্ষেপ। আখচাষিদের সুবিধা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি, শ্রমিক-কর্মচারীদের দিকেই খেয়াল রাখা হচ্ছে। তিনি এ অঞ্চলের চাষিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরো বলেছেন, দেশের ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান, জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান কেরুজ চিনিকলকে রক্ষা করতে বেশি বেশি করে আখচাষের কোনো বিকল্প নেই।