আটকের পর নিরঞ্জন মুক্ত : অপচিকিৎসা থেকে মুক্তি চায় এলাকাবাসী

আলমডাঙ্গার এক সময়ের নাপিতের অবৈধ কবিরাজির বিরুদ্ধে পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ

 

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার নিরঞ্জন কবিরাজকে থানা পুলিশ আটক করলেও ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কী কারণে তাকে আটক করা হলো আর কেনই বা তাকে ছেড়ে দেয়া হলো তা বুঝতে পারেনি সচেতন মহল। এ মহলের প্রশ্ন তাহলে কি নিরঞ্জন কবিরাজ অবৈধ কবিরাজির বৈধতা পেয়ে গেলো? দিনের পর দিন নিরঞ্জন সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে এলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আলমডাঙ্গা পৌর শহরের আলিম মাদরাসার নিকটবর্তী বাড়িতে আস্তানা বানিয়ে কবিরাজি ব্যবসা গেঁড়ে বসেন নিরঞ্জন। বিভিন্ন এলাকার সরল-সোজা মানুষকে বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নেন হাজার হাজার টাকা। তিনি কতিপয় সাংবাদিক, পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাকে ম্যানেজ করে দাপটের সাথে এই অবৈধ কবিরাজি বাণিজ্য করে আসছেন। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আগে সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার তার আস্তানায় রোগী দেখা হতো। এখন প্রতিদিনই রোগী ও রোগীর লোকজন আসে চিকিৎসা নিতে। এই আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে তাবিজ-কবচ, তেলপড়া, পানিপড়া, জলসার বা ঝাড়ফুঁক করে কবিরাজ অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই। সবাইকে ম্যানেজ করার কারণে এক সময়ের নাপিত নিরঞ্জন এখন দাপটের সাথে কবিরাজি করে চলেছেন।’ এ অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার দৈনিক মাথাভাঙ্গায় নিরঞ্জনের কবিরাজি নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সকালে খবর পড়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ নিরঞ্জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে দেনদরবার শেষে দুপুরের পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। আলমডাঙ্গার কয়েকজন সাংবাদিক জানান, নিরঞ্জনকে থানায় নিয়ে ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদ করেন কারো কোনো টাকা দিয়ে থাকেন কি না? আলমডাঙ্গার সাংবাদিকদের অনেকেই এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনে নিরঞ্জন জানিয়েছেন তিনি কাউকে একটি টাকাও দেন না। সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা দু প্রেসক্লাবের সভাপতি খন্দকার হামিদুল ইসলাম আজম, খন্দকার শাহ আলম মন্টুসহ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম সাগর, সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক আতিয়ার রহমান মুকুল, প্রশান্ত বিশ্বাস, এম হাফিজ, ফিরোজ ইফতেখার, অনিক সাইফুল, সাইফুল ইসলাম, ইউনুচ আলী, জামিরুল ইসলাম প্রমুখ। সচেতন মহলের প্রশ্ন যে নিরঞ্জন চিকিৎসার নামে প্রতিদিন অপচিকিৎসা করছেন, তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিলো না পুলিশ। তাহলে নিরঞ্জনকে থানায় নিয়ে কি সালিস করা হলো? তাদের দাবি আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকতে কোন বৈধতা নিয়ে নিরঞ্জন কবিরাজি করছেন? তার বিরুদ্ধে শিগগিরই কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হলে তার অপচিকিৎসার শিকার হয়ে কেউ যদি মারা যায় এ দায়ভার কে নেবে? আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি খন্দকার শাহ আলম মন্টু বলেন নিরঞ্জনের কাছ থেকে কোনো কোনো হলুদ সাংবাদিক সুবিধা আদায় করে থাকতে পারে। কিন্তু মাথাভাঙ্গায় সব সাংবাদিককে জড়িয়ে টাকা নেয়ার কথা বলা হয়েছে এটা দুঃখজনক ও আপত্তিকর। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।