আজ পবিত্র হজ

মাথাভাঙ্গা মনিটর: গতকাল রোববার মদিনা থেকে হাজিরা রওনা দিয়ে সূর্যাস্তের আগেই মক্কায় উপস্থিত হওয়ার পরই শুরু হয়ে গেছে পাঁচ দিনব্যাপি পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। আজ সোমবার ৮ জিলহজ পবিত্র হজ। আজ সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন সারাবিশ্ব থেকে সমবেত হওয়া লাখ লাখ হাজি। ইহরাম পরিহিত অবস্থায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় লাখ লাখ হাজির কণ্ঠে উচ্চারিত হবে, লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি মাতা লাকা ওয়ালমুলক লা শারিকা লাক। এর বাংলা অর্থ হচ্ছে, আমি হাজির। হে আল্লাহ আমি হাজির। তোমার কোনো শরিক নেই। সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধুই তোমার। সব সাম্রাজ্য তোমার। তোমার কোনো শরিক নেই। আরাফাত ময়দানের মসজিদে জোহরের নামাজের আগে খুতবা পাঠ করবেন মক্কার গ্র্যান্ড ইমাম। খুতবা পাঠ শেষে জোহর ও আছরের ওয়াক্তের মাঝামাঝি সময়ে হাজিরা জামায়াতের সাথে কছর নামাজ আদায় করবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তাআলার জিকির আসকারে মশগুল থাকবেন। সূর্যাস্তের পর হাজিদের গন্তব্য মুজদালিফার দিকে। সেখানে উপস্থিত হয়ে তারা মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় শেষে সবাই বিশ্রাম নেবেন। মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করে আগামীকাল মঙ্গলবার ৯ জিলহজ মিনায় ফিরে যাবেন।

হজের তৃতীয় দিন ১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজীরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথান্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত। হাজিরা মক্কায় ফিরে কাবাশরিফ তাওয়াফ ও সায়ী (কাবার চারদিকে সাতবার ঘোরা ও সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সাতবার দৌড়ানো) করে আবার মিনায় ফিরে যাবেন।

জিলহজের ১১ তারিখ মিনায় রাতযাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজিরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের উপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। আর এ কাজটি করা সুন্নত। পরদিন ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজিরা তিনটি শয়তানের ওপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যান। আর মক্কায় পৌঁছার পর হাজিদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে কাবাশরিফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ী তাওয়াফ। স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ী তাওয়াফ অর্থাত্ কাবাশরিফে পুনরায় সাতবার চক্কর দেয়ার মাধ্যমে হাজিরা সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজব্রত পালন।

বিদায় তাওয়াফ সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ১৩ জিলহজ মিনা থেকে অবসর হয়ে, বিদায়ী তাওয়াফের জন্য সরাসরি বায়তুল্লাহ শরীফে যাননি। তিনি মক্কা নগরীর উপকণ্ঠে অবস্থিত আবতাহা নামক স্থানে অবতরণ করেন। এর বর্তমান নাম হচ্ছে খায়েক বনি কেনানা। এখানে তিনি জোহর, আছর, মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে অল্প সময়ের জন্য ঘুমিয়েছিলেন। এরপর তিনি বায়তুল্লাহ শরিফে গিয়ে বিদায়ী তাওয়াফ করে মদিনার উদ্দেশে যাত্রা করেন।