আগামীতে বেতন থেকে আয়কর কেটে রাখার ইঙ্গিত

 

স্টাফ রিপোর্টার: আয়কর দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের অনীহা দেখে আগামীতে বেতন থেকে তা কেটে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও এই পদ্ধতি চালুর সম্ভাব্যতার কথা বুধবার উৎসে আয়কর সংগ্রহ : আমাদের করণীয় শীর্ষক সেমিনারে বলেন তিনি। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন দেয়ার সময় আয়কর কেটে রাখা হয় না। করযোগ্য কর্মকর্তারা হিসাব করে এনবিআরে তাদের আয়কর জমা দেন এবং বছর শেষে আয়কর বিবরণী দাখিল করেন।

সেমিনারে জানানো হয়, বার্ষিক আয়ের ভিত্তিতে বর্তমানে একাদশ গ্রেডের কর্মকর্তারা পর্যন্ত করের আওতায় পড়েন। এই গ্রেড পর্যন্ত কর্মকর্তার সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। কিন্তু এনবিআর রিটার্ন পায় মাত্র ৬৫ থেকে ৭০ হাজার। সেমিনারে এনবিআর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চলতি অর্থবছর থেকে করযোগ্য অর্থ উপার্জনকারী সরকারি কর্মকর্তাদের উৎসে আয়কর দেয়ার বিধান চালু হয়েছে। প্রতিমাসে এ কর না দিলে প্রদেয় করের ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ আরোপের বিধানও রয়েছে। কিন্তু অর্থবছরের নয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পর এখনও কর্মকর্তারা উৎসে আয়কর দেয়া শুরু করেননি। এমনকি এনবিআর কর্মকর্তারাও উৎসে কর দিচ্ছে না। এই তথ্য উপস্থাপনের পর এনবিআর চেয়ারম্যান বেতন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগামীতে কর কেটে নেয়ার ইঙ্গিত দেন।

আমাদের সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন থেকে যেভাবে বিভিন্ন ধরনের বিল কর্তন করা হয়, একইভাবে এখন বেতন থেকে আয়কর কর্তনেরও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। এনবিআর ও মহা-হিসাব নিরীক্ষকের দপ্তরসহ বিভিন্ন কার্যালয়ে অটোমেটেড হওয়ায় এই পদ্ধতিতে আয়কর কেটে রাখা সহজ হবে বলে মনে করেন নজিবুর। আগামী অর্থবছরের বাজেটের প্রস্তুতিপর্ব শুরুর পর এই সেমিনারে রাজস্ব আদায় গতিশীল করতে নানা পদক্ষেপও তুলে ধরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে যুগোপযোগী ও হিসাব ব্যবস্থাপনাকে রাজস্বমুখী করতে এনবিআর এবং সিএজি দফতরের সাথে পারস্পরিক টেকসই সম্পর্ক গড়ে তুলতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সাথেও আমরা কাজ করছি। নজিবুর এনবিআর ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চিফ অ্যাকাউন্টিং অফিসারের (সিএও) সাথে ফোরাম তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এ ফোরামের সাথে এনবিআরের নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে কর আহরণ গতিশীল হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। সেমিনারে হিসাব মহানিয়ন্ত্রক আবুল কাশেম, এনবিআর ও সিএজি কার্যালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকার কর অঞ্চল-২ এর কমিশনার কানন কুমার রায় ট্যাক্সেস জোন-২ ঢাকা অ্যান্ড সিজিএ এবং ঢাকার কর অঞ্চল-৪’র কমিশনার আলমগীর হোসেন উৎসে আয়কর সংগ্রহ: আমাদের করণীয় শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।