অবশেষে নিশ্চিত ১০০ জনের হজযাত্রা

 

স্টাফ রিপোর্টার: গ্রুপ লিডারের প্রতারণার শিকার হওয়া সেই ১০০ জনের হজযাত্রা অবশেষে নিশ্চিত হয়েছে। ইতোমধ্যেই সবার ভিসা হয়েছে। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত শরীফ এয়ার সার্ভিসেসের কো-অডিনেটর ওমর ফারুক যায়যায়দিনকে বলেন, গ্রুপ লিডারের প্রতারণার শিকার হওয়া ১০০ জনের সবার হজে যাওয়া নিশ্চিত হয়েছে। ইতোমধ্যেই সবার ভিসা হাতে এসেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর সবার ফ্লাইট হবে। দু’একদিনের মধ্যেই সবার বোডিং কার্ড হাতে পাওয়া যাবে।

জানা গেছে, মূলত শরীফ এয়ার সার্ভিসেস ও হক ট্রাভেলস নামে দুইটি এজেন্সির দেনা-পাওনার গ্যাঁড়াকলে আটকা পড়েন চলতি বছর হজে যেতে ইচ্ছুক ১০০ ব্যক্তি। এদের সবাই চলতি বছর হজে যেতে শফিকুল আমিন নামের এক গ্রুপ লিডারের কাছে টাকা জমা দিয়েই বিপদে পড়েন। কারণ শুধু মোয়াল্লেম ফি জমা দিয়েই প্রায় ১ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যান ওই গ্রুপ লিডার। এর আগে শফিকুল আমিন হক ট্রাভেলসের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বিগত সময়ে প্রায় ২ কোটি টাকা ঋণী হন। তাই এবার হক ট্রাভেলস তার পুরনো পাওনা বাবদ ৬২ লাখ টাকা আদায়ের পর শফিকুল আমিনকে বের করে দেন। কিন্তু এবারো হজে যেতে ইচ্ছুক ১০০ জনের কাছ থেকে টাকা আদায় করলেও সব টাকা পরিশোধ না করে শুধু মোয়াল্লেম ফি বাবদ শরীফ এয়ার সার্ভিসকে ২৮ লাখ টাকা প্রদান করে বাকি টাকা নিয়ে তিনি পালিয়ে যান। ফলে চলতি বছর হজে যেতে বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই অনিশ্চয়তায় পড়েন ওই ১০০ ব্যক্তি। এ নিয়ে শরীফ এয়ার সার্ভিসেস ও হক ট্রাভেলসের সঙ্গে সৃষ্টি হয় দ্বিমুখী দ্বন্দ্ব। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি সমাধানে হজ এজেন্সি মালিকদের ব্যবসায়ী সংগঠন হাবের (হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) নেতারাও মধ্যস্থতার চেষ্টা করেন। গ্রুপ লিডারের প্রতারণার শিকার হওয়া ১০০ জনের হজযাত্রা নিশ্চিত করতে উভয় এজেন্সির সঙ্গে হাব নেতারা কয়েক দফায় বৈঠক করেন। বৈঠকে হক ট্রাভেল সার্ভিসেস লিমিটেড শরীফ এয়ার সার্ভিসেসকে ৬২ লাখ ৫২ হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত দেন হাব। এ জন্য হাব হক ট্রাভেলসকে একটি চিঠিও পাঠায়। কিন্তু প্রথমে হাবের সিদ্ধান্ত না মেনে উল্টো হাবের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন হক ট্রাভেল সার্ভিসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম ফারুক। এতে আরো বেশি করে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় হজে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যে। শুধু তাই নয়, বিষয়টি ধর্ম মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়ায়। শরীফ এয়ার সার্ভিসেস এ ব্যাপারে তাদের অবস্থান উল্লেখ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠিও পাঠায়। শেষ পর্যন্ত শরীফ এয়ার সার্ভিসেস ও হক ট্রাভেলস হজে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করে উভয় প্রতিষ্ঠান সমানভাবে ক্ষতিপূরণ দিয়ে সবাইকে হজে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

এ ব্যাপারে হক ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম ফারুক যায়যায়দিনকে বলেন, আমাদের অতি লোভের কারণেই আসলে এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। তাই সবাই এর খেসারত দিচ্ছি। তিনি বলেন, মূলত গ্রুপ লিডারের সঙ্গে লেনদেনে আইনি কোনো চুক্তি না থাকার সুযোগেই এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। তবে শুধু আল্লাহর মেহমানদের মানবিক দিক বিবেচনা করে উভয় এজেন্সি ক্ষতিপূরণ দিয়ে হলেও তাদের হজে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। ফলে চলতি বছর হজে যাওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিলো আপাতত তা কেটে গেছে। তবে এখনো থেকে গেছে গ্রুপ লিডারদের প্রতারণা বন্ধের সব ছিদ্রই।