অন্তিম শয়ানে সৈয়দ শামসুল হক

 

শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধা : জন্মস্থান কুড়িগ্রামে দাফন

স্টাফ রিপোর্টার: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল। সবাই ভালোবাসা জানাতে এসেছিলেন ফুল হাতে নিয়ে। শোকে ভারি হয়ে উঠেছিলো বাংলার আকাশ। শ শ মানুষ দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করে কবির কফিনে রেখে গেছেন ফুলের তোড়াটি। বলেছেন, তোমাকে আমরা ভুলবো না। বলেছেন, এভাবে চলে যেতে নেই সব্যসাচী।

প্রিয় কবি ও লেখক সৈয়দ শামসুল হককে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল বুধবার সকাল থেকেই শহীদ মিনার এলাকায় মানুষের ঢল নামে। এ সময় সৈয়দ হকের বন্ধু, শুভানুধ্যায়ী এবং গুণমুগ্ধ মানুষ ভিড় করেন শহীদ মিনারে। হাতে হাতে গোলাপ, রজনিগন্ধা। সবাই যেন ফুলে ফুলে ছেয়ে দিতে চান প্রিয় লেখকের কফিন।

সারাজীবন মানুষের জন্যই ছিলো তার সকল কাজ। বিরামহীনভাবে যে মানুষটি অকাতরে বিলিয়েছেন ভালোবাসা, আজ তিনি নীরব। তার নিথর দেহ শোকে কাতর করে তুলেছে পুরো দেশকে। গতকাল হাসপাতাল থেকে শহীদ মিনার,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদ, সেখান থেকে নিজের প্রিয় জন্মস্থান কুড়িগ্রাম সবখানেই মানুষের ঢল নেমেছিল প্রিয় কবিকে একবার দেখার জন্য। তোমাকে ভালোবাসি – কথাটি একবার বলবার জন্য।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সৈয়দ শামসুল হকের শ্রদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। তার স্মরণে সেখানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। খোলা হয় শোক বই। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ জোহর তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকালে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাংলা একাডেমি ও চ্যানেল আই কার্যালয়ে। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।

কুড়িগ্রামে জানাজার আগে কবিপুত্র দ্বিতীয় সৈয়দ হক বলেন, জলেশ্বরী আজ তোমার ছেলেকে ফিরিয়ে এনেছে তোমার কাছে। হৃদয়ের কাছে, ভালোবাসার কাছে। প্রিয় জন্মভূমির কাছে। আমি গর্বিত। বাবার প্রতি মানুষের ভালোবাসা দেখে গর্বে বুক ভরে গেছে। এ মাটিতে শায়িত হতে পেরে তিনি খুব খুশি হয়েছেন। কুড়িগ্রামবাসীকে ধন্যবাদ।