অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভা গঠিত হচ্ছে আজ

স্টাফ রিপোর্টার: আজ সোমবার গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভা। বিকেলে বঙ্গভবনের দরবার হলে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যরা শপথ গ্রহণ করবেন। শপথ বাক্যপাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট। নির্বাচনকালীন এ মন্ত্রিসভা ৩০ সদস্যের হতে পারে। এতে জাতীয় পার্টি (এ), জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও সাম্যবাদী দল যোগ দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে বর্তমান মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বেগম মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও ওবায়দুল কাদের, জাতীয় পার্টির (এ) জিএম কাদের, জাসদের হাসানুল হক ইনু ও টেকনোক্র্যাট কোটায় সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া সর্বদলীয় অন্তর্বর্তী সরকারেও থাকছেন বলে জানা গেছে। তারা মন্ত্রিসভায় থাকলে নতুন করে তাদের আর শপথ নিতে হবে না। মন্ত্রিসভার নতুন সদস্য হিসেবে শপথ নিতে পারেন- আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। জাতীয় পার্টির (এ) বেগম রওশন এরশাদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মুজিবুল হক চুন্নু ও সালমা ইসলাম ছাড়াও টেকনোক্র্যাট কোটায় জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। জাসদের মইনুদ্দীন খান বাদলেরও মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সাথে বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় কয়েকজন নতুন মন্ত্রী নিয়ে ছোট আকারের সর্বদলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনে তার ধারণার বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর এ নির্বাচনকালীন সরকারের ধারণা ও ইচ্ছাকে স্বাগত জানান এবং এ সরকারের সাফল্য কামনা করেন। রাষ্ট্রপতির সাথে প্রধানমন্ত্রীর এক ঘণ্টার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার আকার হবে বর্তমান কাঠামোর চেয়ে ছোট। তিনি জানান, বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যদের পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরীক্ষা করে দেখছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে পৌঁছান। এ সময় রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তাকে স্বাগত জানান। গতকাল অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোনো সময় নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠনের কথা জানান।

বৈঠক সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভার বৈঠকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বর্তমান মন্ত্রিসভার কাঠামো অক্ষুন্ন রেখেই আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দেন। এ সময় তিনি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভার দৃষ্টান্তও তুলে ধরেন। তার এ প্রস্তাবে কয়েক জন মন্ত্রীরও সায় ছিলো। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ইতোমধ্যে ক্ষুদ্র পরিসরের সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন। বর্তমান কাঠামোতে মন্ত্রিসভার এটাই শেষ বৈঠক বলে জানান।

এছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, পদত্যাগের পর মন্ত্রীদের মিডিয়ার সামনে বিভিন্ন বক্তব্য দেয়া ঠিক হয়নি। মিডিয়ার সামনে কথা বলার আগে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ছিলো। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেশি কথা ঠিক নয়। বুঝে-শুনে কথা বলতে না পারলে চুপ থাকাই ভালো। এ সময় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন সদস্যের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বৈঠকে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির (এ) চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের বিষয়ে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী তাদের পর্যবেক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। একজন মন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালেও এরশাদ নির্বাচন থেকে দূরে থাকেননি। ২০০৮ সালে মহাজোটের সাথে নির্বাচন করেছেন, এবারও তিনি নির্বাচনে আসবেন।