২৪ ঘণ্টায় নতুন কোনো করোনারোগী শনাক্ত হয়নি

অনলাইন সংস্করণ: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় কারো করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এর আগে শুক্রবার দুজন চিকিৎসকসহ চার ব্যক্তি প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে দেশের সবশেষ পরিস্থিতি জানাতে শনিবার দুপুরে অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে আসেন সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এ সময় তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আমরা আইইডিসিআরের হটলাইনে তিন হাজার ৪৫০টি কল পেয়েছি। সবগুলোই ছিল কোভিড-১৯ সংক্রান্ত। অধ্যাপক সেব্রিনা বলেন, এ পর্যন্ত আইইডিসিআরে এক হাজার ৬৮টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এছাড়া চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেও (বিআইটিআইডি) পরীক্ষা শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে পাঁচটি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। অর্থাৎ সেখানে আটটি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সকল নমুনা পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে আমরা নতুন কোনো সংক্রমণ শনাক্ত করিনি বলে জানান আইইডিসিআর পরিচালক। তিনি বলেন, তার মানে আমাদের সর্বমোট নিশ্চিত রোগীর সংখ্যা ৪৮ জন। ‘আমরা আপনাদের সুখবর দিতে চাই যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজন, যাদের মধ্যে কোভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ ছিলো, তাদের মধ্যে এখন কোভিড সংক্রমণ নেই। কাজেই আক্রান্ত ৪৮ জনের মধ্যে ১৫ জন সুস্থ হয়ে গেছেন। তিনি জানান, এছাড়া যাদের কোভিড-১৯ সংক্রমণ নির্মূল হয়েছে, তাদের একটি বিশ্লেষণ করে দেখেছি, তারা মোটামুটিভাবে সর্বোচ্চ ১৬ দিন পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের লক্ষণ-উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদের একজনের কিডনি সমস্যা ছিলো, তাকে সেখানে ডায়ালাইসিসের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। তিনি এখন করোনা সংক্রমণমুক্ত।

‘গতকাল যে চারজন করোনামুক্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে তিনি ছাড়াও আরও একজনের উচ্চরক্তচাপ ছিলো। তাকে সে অনুসারে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বাকি দুজনের কোনো দীর্ঘমেয়াদী রোগ ছিলো না। এখন আইসোলেশনে আছেন ৪৭ জন।’ তিনি বলেন, আমরা এখন কেউ ঘরের বাইরে যাবো না, এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা পদ্ধতি প্রসারিত করা হয়েছে। কাজেই সবাইকে সেখানকার হটলাইনে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। আইইডিসিআরের হটলাইনগুলো সবসময় খোলা রয়েছে জানিয়ে ধৈর্য ধরে সবাইকে সহযোগিতা করতে অনুরোধ করেন।

করোনায় সতকর্তার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক সেব্রিনা বলেন, আমাদের সামাজিক বিচ্ছিন্নকরণের আজকের দ্বিতীয় দিন চলছে। এ পর্যন্তু আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের আদেশ-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে জনস্বার্থে যে আদেশ ও নির্দেশনা দেয়া হয়, সেগুলো আপনারা অবশ্যই মেনে চলবেন। জনগণের ভালোর জন্য, জনগণের সুস্থতা-স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে সরকারি পদক্ষেপগুলো নিয়েছি।

‘অবশ্যই ঘরের বাইরে যাবেন না, ঘরের ভেতরে থাকবেন। ঘরের ভেতরে থেকে যে বিষয়গুলো চর্চা ও পরিচর্যা করতে বলে থাকি, সেগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে।’ তিনি জানান, ইতিমধ্যে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবেন। কাশি শিষ্টাচার অবশ্যই মেনে চলবেন। নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ধোবেন। অপরিষ্কার হাতে নাক-মুখ-চোখ স্পর্শ করবেন না। যাদের বয়স ষাটোর্ধ্ব কিংবা যাদের দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে, তারা অবশ্যই অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করে নিজের ঘরের ভেতরেই থাকবেন। একদম নিজের ঘর থেকে বের হবেন না। কারও সঙ্গে হাত-মেলানো, কোলাকুলি করা থেকেও বিরত থাকার আহ্বান জানান সেব্রিনা। ‘আমাদের পরিকল্পনায় যে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিলো, তাতে রোগের বিস্তারটাকে ভাগ করে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে,’ যোগ করেন আইইডিসিআরের পরিচালক।