সাকিবকে নামিয়ে ফেরার পথে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত

 

নিহত এক : আহত চার

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশের ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে কক্সবাজারে নামিয়ে ফেরার পথে কক্সবাজারের উখিয়ায় বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা মেঘনা এভিয়েশনের একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। তার নাম শেখ মো. শাহ আলম (৩২)। গুরুতর আহত চারজনকে হাসপাতালে চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হেলিকপ্টারের দরজা খুলে ভিডিও করাকে এ দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ হিসেবে জানিয়েছে মেঘনা এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজার সদর থানার এসআই মো. ওমর ফারুক জানান, শাহ আলম ঈগল বি নামের একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার হিসাব বিভাগের কর্মী ছিলেন। তার বাড়ি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামে। বাবার নাম শেখ মো. শামসুর রহমান। আহতরা হলেন- ঈগল বি’র কর্মী মো. শরিফুল ইসলাম, তার দুই ছেলে এবং পাইলট শফিকুল ইসলাম। পুলিশ জানিয়েছে, গুরুতর আহত পাইলটকে চিকিত্সার জন্য ঢাকায় আনা হয়েছে।

উখিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়ের জানান, ঈগল বি’র হয়ে হুয়াই এর একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নিতে ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান গতকাল সকালে ওই হেলিকপ্টারে করে কক্সবাজারে আসেন। ইনানীর হোটেল রয়েল টিউলিপে সাকিবকে নামিয়ে দিয়ে হেলিকপ্টারের পাইলট ঈগল-বি’র লোকজন নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। পথে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া এলাকায় রেজু খালের মোহনা সংলগ্ন সৈকতে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা সাংবাদিকদের জানান, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ইনানির ঝাউবাগানের ওপর কয়েকবার চক্কর দেয় হেলিকপ্টারটি। কক্সবাজার বিমানবন্দরের ম্যানেজার সাধন কুমার মোহন্ত বলেন, হেলিকপ্টারটি কক্সবাজারে প্রবেশের সময় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেনি বা অবতরণের অনুমতি নেয়নি। দুর্ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু আমি অবগত নই। এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই বিপুল সংখ্যক উত্সুক জনতা বিধ্বস্ত কপ্টারের কাছে ভিড় করে। স্থানীয় জেলেরা এগিয়ে গিয়ে আরোহীদের উদ্ধারে কাজ শুরু করেন। পরে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হেলিকপ্টারটি ঘিরে ফেলেন। রবিনসন আর ৬৬ মডেলের ওই হেলিকপ্টারে পাইলটসহ মোট পাঁচজন ছিলেন। তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হলে একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয় বলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিত্সক রফিকুল হাসান জানান।

দরজা খুলে ভিডিও করায় দুর্ঘটনা: আহত পাইলটের বরাত দিয়ে হেলিকপ্টারটির কর্তৃপক্ষ মেঘনা এভিয়েশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, শাহ আলম হেলিকপ্টারের দরজা খুলে ভিডিও করার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ইনানীর স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে চিকিত্সাধীন আমাদের উইং কমান্ডার শফিকুল ইসলাম আমাকে জানিয়েছেন, শাহ আলম হেলিকপ্টারের দরজা খুলে ভিডিও করলে পাইলট তাকে নিষেধ করেন। কিন্তু তিনি পাইলটের কথা অমান্য করেই দরজা খোলা রেখে ভিডিও করছিলেন। খোরশেদ আলম জানান, ওই সময় পাইলট শাহ আলমকে বলেন, ভিডিও যখন করতে চান তাহলে নিচের দিকে যাই। এভাবে সাগরের ওপর থেকে নামতে গিয়ে বালুতটে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। শুধু পাইলটের বলা এ কথার ওপর ভরসা করে বসে না থেকে নিজেরাই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে বের করবেন বলে জানান তিনি।