নানিবাড়ি গিয়ে মায়ের সাথে দেখা হলো না শিশু শোভনের

সরোজগঞ্জ/পাঁচমাইল প্রতিনিধি: নানিবাড়ি গিয়ে মায়ের সাথে দেখা হলো না শিশু শোভনের। তার আগেই ঘাতক বাস তার প্রাণ কেড়ে নিলো। গতকাল বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের নবীনগর (আটমাইল) নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শোভন আলী সদর উপজেলার ছোট আড়িয়া গ্রামের খবির উদ্দীনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আলমসাধুযোগে (শ্যালোইঞ্জিন চালিত) দাদি আদুরী খাতুনের সাথে নানাবাড়ির উদ্দেশে বের হয় শোভন আলী (৬)। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আটমাইল নামক স্থানে পৌঁছুলে আলমসাধু থেকে নেমে রাস্তা পার হওয়ার সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জরুরি সংবাদপত্র কাজলা পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-জ ১৪-০৪৩০) শিশু শোভনকে ধাক্কা দেয়। এতে গুরুত্ব জখম হয় সে। স্থানীয়রা শোভনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডা. এহসানুল হক তন্ময় মৃত বলে ঘোষণা করেন শিশু শোভনকে।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবীননগর গ্রামের নায়েব আলীর মেয়ে সাথে একই উপজেলার ছোট আড়িয়া গ্রামের খবির উদ্দিনের বিয়ে হয়। তাদের রয়েছে দুই সন্তান। গত কয়েকদিন আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বাধে। এতে অভিমান করে খবির উদ্দিনের স্ত্রী পিতার বাড়ি নবীননগরে চলে আসেন। গতকাল বুধবার সকালে শিশু শোভন মায়ের কাছে আসার জন্য কান্নাকাটি শুরু করে। শোভন সকালে তার দাদির সাথে মায়ের কাছের আসার জন্য বের। আলমসাধুযোগে নবীননগরে পৌঁছুলে রাস্তা পার হওয়ার জন্য ঢাকা থেকে ছেড়ে আসার জরুরি সংবাদপত্র কাজলা পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-জ ১৪-০৪৩০) শিশু শোভন আলীকে ধাক্কা দেয়। এতে শোভন গুরুতর জখম হয়। উদ্ধার করে নেয়া চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক এহসানুল হক তন্ময় শিশু শোভনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে সংবাদপত্র বাসটি সরোজগঞ্জ মনিরুল ইসলাম ফিলিং স্টেশনে রেখে চালক ও হেলপার পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে শোভনের নানা নায়েব আলী জানান, আমার মেয়ে শারমিন খাতুনের সাথে ছোট আড়িয়ায় খবির উদ্দীনের বিয়ে হয়। গত এক সপ্তাহ আগে আমার মেয়েকে মারধর করে জামায় খবির উদ্দীন। মেয়ে অভিমান করে পরের দিন চলে আসে আমার বাড়িতে। নাতি ছেলে দুটি তার পিতার কাছেই ছিলো। গত দুদিন ধরে নাতি ছেলে শোভনের জ্বর। তার মাকে দেখবে বলে দাদির সাথে আলমসাধুযোগে করে নবীননগরে পৌঁছায়। দাদি ভাড়া মেটাতে গিয়ে শোভন একাই রাস্তা পার হতে গেলে অপরদিক থেকে ছেড়ে আসা বাস শোভনকে চাপা দেয়। এতে শোভনের একটি পা চাকায় পিষ্ট হয়ে যায়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘বাসটি পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। পরিবার মামলা না করায় পুলিশি তদন্ত শেষে শোভনের মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। বিকেলে নিজ গ্রামে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।