দামুড়হুদা-দর্শনা সড়কের লোকনাথপুর তালতলা নামকস্থানে ছিনতাই রঘুনাথপুর বাজারে ছিনতাইকারী পাকড়াও : লম্বা ভোজালি উদ্ধার

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার রঘুনাথপুর বাজারের জনৈক নৈশপ্রহরীর হাতে মানিক (২৩) নামের এক যুবক আটক হয়েছে। তার নিকট থেকে প্রায় ২০ ইঞ্চি লম্বা একটি ভোজালি ও একটি মোবাইলসেট উদ্ধার করা হয়। গতপরশু রাতে তাকে আটকের পর স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে সে ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে।

সকালে গ্রামবাসী তাকে গণধোলায় শেষে পুলিশে খবর দিলে থানা পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে থানা পুলিশের কাছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে ছিনতাইকারী মানিক। সে চিৎলা নতুনপাড়ার বাবলুর বাড়িতে ডাকাতি মামলার একজন আসামি বলে থানা পুলিশ জানিয়েছে। গত সোমবার রাতে দামুড়হুদা-দর্শনা সড়কের লোকনাথপুর তালতলা নামকস্থানে ছিনতাই শেষে বাড়ি ফেরার পথে সে নৈশপ্রহরীর হাতে আটক হয়। সে উপজেলার চিৎলা নতুন পাড়ার মোমিনের ছেলে।

জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা নতুনপাড়ার আব্দুল মোমিনের ছেলে মানিক রোডে ছিনতাই ও ডাকাতির উদ্দেশে উপজেলার জয়রামপুর শেখপাড়ার ঘরজামাই লাভলু, একই উপজেলার ডুগডুগী গ্রামের মারুফ (নাম নিয়ে বিভ্রাট আছে) ও দর্শনা সুইপারপট্রির বাবু মিয়া নামের এ তিনজনকে সাথে নিয়ে গত সোমবার রাত আনুমানিক ১টার দিকে দামুড়হুদা-দর্শনা সড়কের তালতলা নামকস্থানে অবস্থান নেয়। ধারালো অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শুরু করে ছিনতাই। এক ট্রাক্টর চালকসহ মোট চারজনের কাছ থেকে প্রায় দু লক্ষাধিক টাকা ও ৪টি মোবাইলফোন ছিনতাই শেষে পুলিশের গাড়ি দেখে পার্শ্ববর্তী মাঠের মধ্যে নেমে পড়ে এবং ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। মানিক ওই তিনজনকে খুঁজে না পেয়ে পথ হারিয়ে উঠে আসে লোকনাথপুর মাঠের মধ্যদিয়ে গোবিন্দপুর-রঘুনাথপুর সড়কে। ওই সড়ক ধরেই সে নিজ বাড়ি চিৎলায় ফিরছিলো। রাত আনুমানিক ৩টার দিকে পথিমধ্যে রঘুনাথপুর বাজারে এসে পৌঁছুলে বাজারে পাহারারত জনৈক এক নৈশপ্রহরীকে দেখে বাজারের পেছনে আমগাছের গোড়ায় তার কাছে থাকা লম্বা ভোজালিটি রেখে আসে। বাজার পার হওযার সময় নৈশপ্রহরী তাকে দাঁড় করায়। তার বাড়ি কোথায় এবং কোথা থেকে আসা হচ্ছে জানতে চাইলে মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং কৌশলে মিথ্যা কথা বলে পালানোর চেষ্টা করে। নৈশপ্রহরীও কৌশল খাটিয়ে একটি দোকানের মাচায় বসিয়ে তার সাথে শুরু করে খোসগল্প। ভোর হওয়া মাত্রই নৈশপ্রহরী তাকে চেপে ধরে রেখে বাজারের পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজনকে ডাক দেয়। ওই সময় বাজারের পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজনরা ছুটে আসে। ছিনতাইকরা একটি মোবাইলফোন উদ্ধারের পর শুরু করে জিজ্ঞাসাবাদ। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক লুকিয়ে রাখা ওই আমগাছের গোড়া থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ২০ ইঞ্চি লম্বা একটি ভোজালি। গ্রামবাসী গণধোলায় শেষে পুলিশে খবর দিলে দামুড়হুদা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এসব তথ্য মানিক নিজেই দামুড়হুদা থানা হাজতে বসে এ প্রতিবেদকের নিকট প্রকাশ করে।

থানার নথি তলব করে দেখা যায় বিগত ৪ মাস আগে চিৎলা গ্রামের বাবলুর বাড়িতে ডাকাতি মামলায় তার নাম আছে। শুরু করে জিজ্ঞাসবাদ। আটক ছিনতাইকারীর দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এসআই মামুন তাকে সাথে নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দিনভর উপজেলার বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্ত ঘটনার সাথে জড়িত অপর তিনজনের বাড়িতে হানা দিয়ে তাদের কাউকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্যের জন্য তাকে আপাতত থানাহাজতে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবিব জানান, আটক ছিনতাইকারী মানিককে চিৎলায় বাবলুর বাড়িতে ডাকাতি মামলায় আটক দেখানো হয়েছে। আজ বুধবার রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হতে পারে।